শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। মাঝিরঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চে থাকে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী। অধিকাংশ যাত্রীর মুখেই নেই মাস্ক। ঘাটে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা, নৌ-পুলিশ ও ঘাট ইজারাদারের জনবল থাকলেও বিষয়টি দেখার কেউ নেই। যাত্রী ও লঞ্চ কর্মচারীদের এমন উদাসীনতায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিআইডব্লিউটিসি ও ঘাট ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে যাতায়াতের জন্য পদ্মা নদী পাড়ি দিতে শরীয়তপুরের মাঝিরঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌ-রুটে ২০টি লঞ্চ চলাচল করে। আকৃতিভেদে এসব লঞ্চে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৭০ থেকে ২৫০ জন। ২২ মিনিট পরপর মাঝিরঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে একটি করে লঞ্চ ছেড়ে যায়। প্রতিদিন এই ঘাট ব্যবহার করেন গড়ে আট থেকে ১০ হাজার যাত্রী। এই বিপুলসংখ্যক যাত্রী পারাপারে হিমশিম খেতে হয় ঘাট কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ঘাটের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেন নৌ-পুলিশ সদস্যরা।
শরীয়তপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য সপরিবারে মাঝিরঘাট এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যের কারও মুখেই নেই মাস্ক। লঞ্চে আসন না পেয়ে নিচ তলায় ভিড়ের মধ্যে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছেন পরিবারের সদস্যরা। মাস্ক না থাকার কারণ জানতে চাইলে আমিনুল বলেন, ‘মাস্ক পরলে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তবে অন্যরা ভুলে মাস্ক পরেনি।’
মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাচ্ছেন সঞ্চয় সিকদার। তিনি বলেন, ‘মা গুরুতর অসুস্থ। সন্ধ্যায় ডাক্তার দেখানোর সিরিয়াল নেওয়া আছে। কোনো উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে ঢাকা যেতে হচ্ছে। লঞ্চে যে পরিমাণ যাত্রী তোলা হয়েছে তাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। আসলে বাধ্য হয়েই লঞ্চে উঠেছি।’
মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটের ইজারাদার মোকলেস মাদবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকাল থেকে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। জেলা শহর থেকে একাধিক বাসে যাত্রী ঘাটে এসেছেন। যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে উঠতে ও মাস্ক পরতে অনুরোধ করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের লঞ্চে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
মাঝিরঘাট লঞ্চঘাটে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিএর ঘাট ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ ইনয়াম বলেন, ‘ঘাটে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে। অতিরিক্ত চাপ থাকায় লঞ্চে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু কিছু লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। আমরা নিয়ম মেনে লঞ্চে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’