নির্বাচনে কর্মী মারা গেলে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম। তাঁর এ ঘোষণা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তবে বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আসন্ন চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে বাসাইলের সাইফুল ইসলামসহ ১৪টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত দুবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এবারও হব। মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমার কর্মকাণ্ড দল মূল্যায়ন করেছে। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ, কোনো মারামারি, সহিংসতা চাই না। কর্মী মারা গেলে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা আমি বলেছিলাম। এর পেছনে কারণ আছে। ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে বাসাইলের রাঙামালিয়া কেন্দ্রে সংঘর্ষে তিনজনকে মেরে ফেলা হয়েছিল। ওই পরিবারগুলোর পাশে কেউ দাঁড়ায় নাই। শেষ পর্যন্ত তাঁরা ভিক্ষা করে খান। এবারও যখন কর্মীদের নিয়ে সভায় বসি, তাঁরা পুরোনো সেই কথা টেনে তোলেন। তখন আমি তাঁদের বিপদে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার জন্য এ কথাগুলো বলি।’
এর আগে এই চেয়ারম্যান প্রার্থী এক উঠান বৈঠকে বলেন, ‘আমার কর্মী যাঁরা, তাঁদের একটা লিস্ট আছে। এই কর্মীদের ভেতরে যদি কেউ মারা যান আমার নির্বাচন করতে গিয়ে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা তাঁর পরিবারকে দেওয়া হবে। আর যদি খুনোখুনি বাইড়াবাইড়ি করে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তাহলে আমি তাঁর সম্পূর্ণ খরচ বহন করব। এমনকি তাঁর সংসারের খরচও আমি চালাব। আমি ঢোরা সাপ। চুপ করে শুয়ে থাকি, আর যখন কামড় মারি তখন মাংসসহ ছিঁড়ে ফেলি।’
ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানান, নির্বাচন সামনে রেখে ইউপি চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যে ইউপি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা থেকে যতজন নৌকার মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন, সবার আবেদন তাঁরা জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠিয়েছেন। এখান থেকে কারও নাম বাদ দেওয়ার এখতিয়ার আর তাঁদের নেই। জেলা আওয়ামী লীগ যাকে ইচ্ছা বাদ দিয়ে নাম কেন্দ্রে পাঠাতে পারে। সাইফুল ইসলামের নামটিও তারা কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।