হোম > ছাপা সংস্করণ

দুর্নীতি ও কলার চেপে ধরা

সম্পাদকীয়

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহ্য করে, উভয়েই সমান অপরাধী—এই প্রচলিত কথাটি জানেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। কিন্তু এ কথা মানেন না, এখনকার দিনে এমন ব্যক্তি খুঁজতে আর হিমশিম খেতে হয় না। এই যেমন সোমবার আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত একটি খবর পড়লে জানা যায় এমন ব্যক্তিদের কথা। ‘কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়’—তারা হয়তো প্রথম প্রবাদটি নয়, এই প্রবাদটিতে বিশ্বাসী।

কেন বলা হচ্ছে এ কথা? খবরে প্রকাশিত ঘটনাটা তাহলে একটু স্মরণ করা যাক। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুমন্ত কুমার বসাক। তিনি ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নাটোর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি রয়েছে তা ভয়ংকর। তিনি নাকি অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন, ঠিকাদারদের ‘কাজ’ পাইয়ে দেওয়ার আশায় ‘পার্সেন্টেজ’ও নেন। সম্প্রতি ৫০টি কাজের দরপত্র আহ্বান করেন তিনি। প্রতিটি কাজ ২০-২৫ লাখ টাকার। এই কাজগুলোও পাইয়ে দেওয়ার আশায় ঠিকাদারদের কাছ থেকে ‘অনৈতিক সুবিধা’ নিয়েছেন বলে সুমন্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

কিন্তু ‘সুবিধা’ নিয়েও রাজশাহীর কোনো ঠিকাদারকে কাজ দেননি বলে চটেছেন এই এলাকার ঠিকাদাররা। কাজ পেয়েছেন শুধু নাটোর, নওগাঁ ও ঈশ্বরদীর ঠিকাদারেরা। রাজশাহীর ঠিকাদারদের ক্রোধের ব্যাপারটি টের পেয়ে ১০ দিন দপ্তরের দরজায় পা মাড়াননি সুমন্ত। এরপর রোববার অফিসে গেলে ঠিকাদারদের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। তিনি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুল হুদার কক্ষে ঠিকাদারদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। কিন্তু এই বৈঠকে যে কাণ্ডটা ঘটে গেছে, তার জন্য হয়তো প্রস্তুত ছিলেন না সুমন্ত। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে মো. রাসেল নামের এক ঠিকাদার সুমন্তর শার্টের কলার চেপে ধরেন। এ নিয়ে হট্টগোল বেড়ে যায় আরও। পরে অবশ্য পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।

বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু পদক্ষেপটা কি শুধু ঠিকাদার রাসেলের বিরুদ্ধে, নাকি শুধু প্রকৌশলী সুমন্ত কুমার বসাকের বিরুদ্ধে? নাকি উভয়ের বিরুদ্ধে? আসলে প্রথমে হওয়া উচিত তদন্ত। তদন্ত যেমন হওয়া উচিত সুমন্ত কুমার বসাকের, তেমনি হওয়া উচিত সেই সব ঠিকাদারের, যাঁরা সুমন্তর ওপর চটে আছেন। দুর্নীতি বা ঘুষ—যেভাবেই সুমন্তর অর্থ লুটপাটের অভিযোগ উঠুক না কেন, তা তো তদন্ত করতেই হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারেও ছাড় দিলে চলবে না যে কারা সুমন্তকে ওই ‘সুবিধা’ দিয়েছে। সম্পাদকীয়র শুরুতেই বলা হয়েছে—অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহ্য করে, উভয়েই সমান অপরাধী।

এখনো প্রমাণিত হয়নি কে বা কারা প্রকৃত অপরাধী। তবে রাসেল যেমন সুমন্তর শার্টের কলার চেপে ধরেছেন, সেভাবে আমাদের হর্তাকর্তারা যদি সজোরে দুর্নীতিরও ‘কলার’ চেপে ধরতেন, তাহলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটত না।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ