মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় এবারও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় দেশীয় জাতের পাশাপাশি হাইব্রিড ভুট্টার আবাদ ব্যাপকভাবে করা হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় ভুট্টার আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন কৃষকেরা।
পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে ভুট্টার আবাদ ভালো হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ চলছে এখন পুরোদমে। ভালো দাম পেয়ে সাধারণ কৃষকের চোখেমুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। ভুট্টা চাষে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। উপজেলার কিছু এলাকায় নাবি জাতের ভুট্টা আবাদ করেছেন কৃষকেরা। অন্যান্য ফসল তোলার পর তাঁরা দেরি করে ভুট্টা আবাদ করেছেন। তাঁদের উৎপাদিত ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব কৃষকেরা আলাপের সময় জানান, মাসখানেক পরে তাঁরা ভুট্টা ঘরে তুলতে পারবেন।
ঘিওর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নেই ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বাইলজুরি, চরবাইলজুরি, পয়লা, সিংজুরি, মাইলাগী, বৈলট, কুশুন্ডা, বানিয়াজুরী, কেল্লাই, উত্তর তরা, নকীব বাড়ি এবং নালী এলাকায় ভুট্টা ব্যাপকভাবে আবাদ করা হয়েছে।
পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরি এলাকার আল মামুন জানান, এ বছর তিনি প্রায় ২ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। মাসখানেক পর এই ভুট্টা তোলা হবে। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভালো দাম যাচ্ছে ভুট্টার।
ঘিওর সদর ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মুন্নাফ জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে ২৫-৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬৫ মনের ওপর ভুট্টা তুলেছেন তিনি। রোদে শুকানোর পর প্রতি মণ ভুট্টা ১ হাজার ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন এ বিষয়ে জানান, মানিকগঞ্জের বাকি উপজেলার মতো ঘিওরেও এবার ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। এবার উপজেলায় ভুট্টা আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। তবে দেশি ভুট্টার চেয়ে হাইব্রিড জাতের ভুট্টায় রোগবালাইয়ের আশঙ্কা কম। দাম বেশি পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, ভুট্টা আবাদের জন্য কৃষকেরা যখন যে পরামর্শ চেয়েছেন, দেওয়া হয়েছে। ফসলের রোগ ও পোকামাকড় দমনে চাষিদের গ্রুপভিত্তিক সচেতন সভা করা হয়েছে। ভুট্টা চাষ চলাকালীন সময়ে কৃষকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছে। এ সময় তাঁদের বীজ, সার, পরামর্শ দিয়ে সর্বোচ্চ সাহায্য করা হয়েছে।