রাজমিস্ত্রি আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নাজমুল ইসলাম। দারিদ্র্যকে জয় করে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে এমন ফলের প্রত্যাশা ছিল নাজমুল ও তার শিক্ষকদের। ফলে খুশি হলেও প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নে বাধ সেধেছে দারিদ্র্য। ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্য নেই উচ্চশিক্ষার।
নাজমুল বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি আব্দুল কুদ্দুস ও গৃহিণী নাজমা বেগমের দ্বিতীয় ছেলে। সে পার্শ্ববর্তী নওগাঁ সদরের সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হতে চায়। তবে তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা রাজমিস্ত্রি আব্দুল কুদ্দুস। তার উপার্জনে সংসার চালানোই দায়। ছেলের পড়ার খরচ জোগাবে কী করে!
নাজমুল জানায়, তার বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বছরের অনেক সময় বিশেষ করে বর্ষাকালে যখন কাজ থাকে না, তখন অনেক কষ্ট করে চলতে হয়। পড়ালেখার খরচ জোগাতে বাধ্য হয়ে সে বাবার সঙ্গে জোগালির কাজ করেছে। নিজের চেষ্টায় ভালো ফল করেছে। তবে নাজমুলের স্বপ্ন এখনো অনেক দূর। ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে চায়। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কী না তা নিয়ে চিন্তিত সে।
নাজমুলের বাবা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘রাজমিস্ত্রির কাজ করে ঠিকমতো সংসার চলে না। ছেলেটার পড়ার খরচের কথা ভাবলে মাথাটা ঘুরে ওঠে। কেমনে ছেলেটাকে কলেজে পড়াই? যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নাজমুলের জন্য বৃত্তি কিংবা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতেন, তাহলে নাজমুলের প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হতো। জানি না শেষ পর্যন্ত কী হবে।’
সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমির প্রধান শিক্ষক ইকবাল সাইদুল কবীর বলেন, ‘নাজমুলের স্বপ্ন পূরণে সবার এগিয়ে আসা উচিত।’