নাম পঞ্চিরাণী। বয়স সত্তর বছরের ওপরে। চোখে-মুখে বয়সের ছাপ। কিন্তু বার্ধক্য তাঁকে কাবু করতে পারেনি। একটি কলস অবলম্বন হিসেবে আকরে ধরে জীবনসংগ্রামে টিকে আছেন পঞ্চিরাণী। তবু কারও দয়ার পাত্র হননি তিন। এ কলসটি অবলম্বন করে মানুষের খাবার পানি সরবারহ করছেন দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে।
গত শতকের ষাট দশকে যশোরের মনিরামপুরের হাজারি লালের সঙ্গে পঞ্চিরাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দিনমজুর স্বামীর সঙ্গে কাজে লেগে যান তিনি। একপর্যায়ে স্বামী হাজারী লাল তাঁকে নিয়ে চলে আসেন জেলার ঝিকরগাছার বাঁকড়া বাজারে। সেখানে তিনি এসে ঝালাইদারের কাজ করতেন। পুরোনো হাঁড়িপাতিল ঝালাই করতেন। কিন্তু তাতে সংসার ভালো না চলায় স্বামীর পাশাপাশি পঞ্চিরাণী বাঁকড়া বাজারে দপ্তরি রাইস মিলে কাজ নেন।
দুজনের রোজগারে সংসার ভালো চললেও তা বেশি দিন সইনি। ১৯৭৪ সালে একদিন রাইস মিলের ফিতায় শাড়ির আঁচল জড়িয়ে দুর্ঘটনায় পঞ্চিরাণীর বাম হাতটি কনুইয়ের ওপর থেকে কেটে পড়ে যায়। এরপর জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। তিন সন্তান নিয়ে স্বামীর কাছ থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি।
স্বামীও নতুন সংসার করেন। ঠাঁই মেলে বাঁকড়া বাজারের একটি খুপরিতে। কিছুদিন পর একটি সন্তান মারা যায়। শুরু হয় পঞ্চিরাণীর জীবনের নতুন অধ্যায়। এক হাত দিয়ে নানা কাজকর্ম করে অন্ন জোগাড় করতেন।