হোম > ছাপা সংস্করণ

কাজ পুরুষের সমান তবু মজুরি কম

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

তিনজন নারী শ্রমিক। তাঁরা হলেন নাহিদা আক্তার, আনোয়ারা বেগম ও ফাতেমা খাতুন। তাঁদের দুজন বিধবা। একজনকে ছেড়ে গেছেন স্বামী। তিনজনই প্রায় ২০ বছর ধরে গাতা করে (দল বেঁধে) দিনমজুরি করেন। কখনো পুরুষের সঙ্গে মাটি কাটেন। কখনো ধানের চারা রোপণ করেন। কখনোবা ধানখেতে নিড়ানি দেন কিংবা রাজমিস্ত্রির সহযোগীর কাজ করেন। সমান কাজ করলেও, নারীদের মজুরি দেওয়া হয় পুরুষের চেয়ে কম।

স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন নাহিদা আক্তার ও আনোয়ারা বেগম। আর ফাতেমার স্বামী ২০ বছর আগে তাঁকে ও দুই ছেলেমেয়ে রেখে অন্যত্র চলে যান। এই তিন নারীর বাড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের পানিমাছকুটি গ্ৰামে। তিনজন একই সঙ্গে কাজ করেন। পরস্পরের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেন। বিপদে-আপদে পাশে থাকেন।

এই তিনজনের মতো অন্য নারী শ্রমিকেরাও বৈষম্যের শিকার। বিশেষ করে গ্রামের নারী শ্রমিকেরা নানা বঞ্চনার শিকার। তাঁরা গৃহশ্রম ও কৃষি খাতে কঠোর পরিশ্রম করলেও, মর্যাদা ও স্বীকৃতি বঞ্চিত।

গতকাল সোমবার সকালে দেখা গেছে, উপজেলার নাওডাঙ্গা ও ফুলবাড়ী সদরের কয়েকটি গ্ৰামে নারী শ্রমিকদের দল বেঁধে জমিতে নিড়ানিসহ নানা কাজ করতে দেখা গেছে।

একাধিক নারী শ্রমিক বলেন, তাঁরা সাধারণত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেন। একই সময় কাজ করার জন্য একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। কিন্তু তাঁরা সমান কাজ করেও মজুরি পান ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। কী করবেন, কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই এই বৈষম্য মেনে নেন।

উপজেলার নাওডাঙ্গা গ্ৰামের বুলবুলি বেগম বলেন, তিনি সারা বছরই কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন। আয়ের তিন ভাগ সংসারের কাজে লাগান। বাকি এক ভাগ দেন স্বামীকে। তিনি বলেন, নারীরা ঘরে-বাইরে শোষণের শিকার।

প্রান্তিক নারীদের নিয়ে কাজ করা বিল্ডিং বেটার পর গার্লস (বিবিএফজি) নামের একটি সংগঠনের প্রতিনিধি ঝর্না বেগম বলেন, প্রতি বছর ৮ মার্চ ঘটা করে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। তখন নানা সভা-সেমিনারে নারীদের অধিকার নিয়ে বক্তৃতা দেওয়া হয়। কিন্তু নারীরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিতই থাকেন। অথচ, সরকারের পক্ষ থেকে মজুরি বৈষম্য নেই। সরকার এটা চায় নারী-পুরুষ সমান মজুরি পাক। কিন্তু মালিক পক্ষের কারণে মজুরি বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. সোহেলী পারভীন বলেন, ‘৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমি একজন নারী হিসেবে নারী শ্রমিকেরা যেন সমপরিমাণ মজুরি পান সেই দাবি জানাচ্ছি। সরকার নারী নির্যাতন বন্ধসহ নারীদের উন্নয়ন এবং গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। নারীরা যাতে সমান মজুরি পান, এ জন্য সচেতন হওয়া উচিত।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ