স্ট্রোক শব্দটি শোনেনি এমন লোক কমই আছে। এত প্রচলিত এ শব্দটি নিয়ে মানুষের বিভ্রান্তিও কিন্তু বেশি। মানুষ যেভাবে ‘স্ট্রোক’ শব্দটির সঙ্গে পরিচিত, ব্যাপারটি সম্পর্কে সেভাবে জানে না।
হার্ট অ্যাটাক শব্দটি সবাই জানে। কিন্তু প্রায় সবাই হার্ট অ্যাটাককে স্ট্রোকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে।
মানুষ ভুল জানতেই পারে। কিন্তু কিছু ভুল তথ্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ভুলগুলো কখনোই করা যাবে না।
স্ট্রোক নিয়ে ভুল তথ্য আপনাকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে পারে। কারণ এটি মানুষের জীবন-মরণের সঙ্গে জড়িত।
কেউ স্ট্রোক করেছেন শুনলেই আমরা মরি কি পড়ি করে ছুটে যাই হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে বা হার্টের চিকিৎসা হয় এমন হাসপাতালে। জ্যামের এ শহরে হাসপাতালে নিতেই তিন থেকে চার ঘণ্টা কেটে যায়। কিন্তু স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসা পেতে হলে স্ট্রোকের চিকিৎসা হয় এমন হাসপাতালে যেতে হবে স্ট্রোকের সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে। স্ট্রোককে হার্ট অ্যাটাক মনে করে হৃদ্রোগ হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ট্রোকের আধুনিক চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
উপসর্গ
হার্ট অ্যাটাক আর স্ট্রোক এ দুটো রোগের উপসর্গে আছে বিস্তর পার্থক্য।
চিকিৎসা
এই দুটো রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেমন ভিন্ন, তেমনি চিকিৎসাও ভিন্ন।
হার্ট অ্যাটাকে ইসিজি ও রক্তে ট্রোপোনিন-আই পরীক্ষা করতে হয়। আর স্ট্রোকে শুরুতেই সিটিস্ক্যান করাতে হবে। স্ট্রোকে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।
স্ট্রোকের চিকিৎসার জন্য সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের কাছে গেলে আইভি থ্রোম্বোলাইসিস করে রোগীকে সুস্থ করা যায়। এ সময় পার হলে ওষুধ ও রিহ্যাবিলিটেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
কাজেই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক একই রোগ নয়। মস্তিষ্কের রক্তনালির রোগ স্ট্রোক। স্ট্রোক হলে নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হোন।
লেখক: নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতাল (নিনস)