বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগ যত ভালো করছে, ততই প্রশংসিত হচ্ছেন অ্যালান ডোনাল্ড কিংবা সাবেক পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। নেপথ্যে আছেন আরেকজন—চম্পাকা রামানায়েকে। জাতীয় দলের সিঁড়িতে ওঠার ধাপ বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটে (এইচপি) ২০১৭ সাল থেকে পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
‘করেছেন’ বলতে হচ্ছে। কারণ, এ মুহূর্তে চম্পাকা আর এইচপির সঙ্গে নেই। বিসিবির সঙ্গে এই মেয়াদে তাঁর চুক্তির আরও প্রায় তিন মাস আছে। তার আগে তাঁকে এইচপি থেকে সরিয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে যুক্ত করা হয়েছে। সিলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিনটি চার দিনের ম্যাচে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বোলিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন চম্পাকা।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, এইচপির সঙ্গে তাঁকে আর দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এইচপির জন্য নতুন বোলিং কোচ খুঁজছে বিসিবি। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কলি কলিমোরের সঙ্গে কথা এগোলেও এখনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। এইচপির বর্তমান ক্যাম্প চলছে সাবেক জাতীয় দলের ক্রিকেটার ডলার মাহমুদকে দিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে যদি চম্পাকার মেয়াদও বাড়ে, তিনি এরপর কাজ করতে পারেন বাংলাদেশ টাইগার্সের সঙ্গে। তবে রামানায়েকের আগ্রহ এইচপি ঘিরেই। এর সঙ্গে পাঁচ বছরের বেশি সময়ের যাত্রা নিয়ে চম্পাকা আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘এইচপির সঙ্গে কাজ নিয়ে খুবই খুশি ছিলাম। এই পাঁচ বছরে এইচপি হয়ে অনেক ফাস্ট বোলার এসেছে। কিছু জাতীয় দলে আছে, কিছু জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছে। এইচপি থেকে জাতীয় দলে আসা—এটা আসলে একটা প্রক্রিয়া। গত পাঁচ বছরে এটাই ঘটেছে। জাতীয় দলের জন্য ফাস্ট বোলার তৈরি—কাজটা আমি ভালোবাসি। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ভালো মানের অন্তত ১০ জন ফাস্ট বোলার আছে। যখন আমি এখানে কাজ শুরু করেছিলাম, সংখ্যাটা খুব বেশি ছিল না। গত পাঁচ-ছয় বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই অবদান রাখতে পেরে আমি খুশি।’
শুধু জাতীয় দল নয়, এ মুহূর্তে এর আশপাশেও পেস বোলারে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ বলা যায়। রেজাউর রহমান রাজা, মুশফিক হাসান, রিপন মণ্ডলরা কড়া নাড়ছেন ভালোভাবেই। তাঁদের নিয়ে চম্পাকার পর্যবেক্ষণ, ‘যখন (২০১৭ সালে) এলাম, ইবাদত-খালেদরা ছিল আমার প্রথম গ্রুপ। তারা এখন জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত। এরপর হাসান মাহমুদ, রেজাউর রহমান রাজা, মুশফিক হাসান, রিপন মণ্ডল, তানজিম সাকিব, সুমন খান এসেছে। তারা ঘরোয়া ক্রিকেট, “এ” দল এবং এইচপির সঙ্গে দারুণ করছে। আরও একজন আছে, মুগ্ধ। এখন চোটে পড়েছে। সে খুবই ভালো। এমনকি কিছু ছেলের সঙ্গে আমি কাজ করেছি, যারা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে। সাকিবের কথা তো বলেছিই। মৃত্যুঞ্জয়-শরীফুল ছিল।’
এইচপিতে কাজ করা শিষ্যদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সাফল্য আনন্দিত করে চম্পাকাকে। এখন তাঁদের খুব একটা কাছে না পাওয়া গেলেও নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। টিভি পর্দায়ও চোখ রাখতে ভুল হয় না। এই যেমন গত মাসে চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে হাসানের রোমাঞ্চকর শেষ ওভারের উত্তেজনা কিছুটা ভর করেছিল চম্পাকার মনেও। এই তরুণ বয়সেও মাথা ঠান্ডা রেখে হাসান যেভাবে শেষ ওভারের চাপ সামলে বোলিং করেছেন, শিষ্যের প্রতি চম্পাকার মুগ্ধতাই প্রকাশ পেল তাতে, ‘একজন কোচের জন্য এটা খুবই খুশির এবং তৃপ্তির বিষয়। এই বিষয়টা (চাপে মাথা ঠান্ডা রাখা) খুব বেশি বোলারের নেই। সে বিশেষ। চাপের মুহূর্ত সামলানোর ক্ষমতা তার মধ্যে আছে। স্কিলও ভালো। সে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে।’