শীতের শুরুতে চাঁদপুরের মতলবে বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা। গত ১০ দিনে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) মতলব হাসপাতালে ২ হাজার জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮৬ ভাগই শিশু। এ সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি।
আইসিডিডিআর,বির মতলব হাসপাতালের তথ্যমতে, ১ থেকে ১১ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত গড়ে ১৮০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৮০ জন রোগী ভর্তি হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৫৫২ জন শিশু। এদের বয়স শূন্য থেকে ৫ বছরের মধ্যে। গতকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত আরও ১০০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু আছে ৮০ জন।
ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ৯৯, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭০, হাজীগঞ্জের ৫৪, কচুয়ার ৭৫, মতলব উত্তরের ৫১, মতলব দক্ষিণের ৫৩ ও শাহরাস্তির ৪৫ জন আছে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছে ৬৮৬ জন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর সদর থেকে ১০২, রায়পুরের ৫৫, রামগঞ্জের ৪২ এবং নোয়াখালীর চাটখিল থেকে ২৩ জন রোগী এসেছে। বাকিরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও শরীয়তপুরের বাসিন্দা।
এদিকে হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। প্রায় প্রতিটি ইউনিটে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই রয়েছে শিশু রোগীর ভিড়।
মাজেদা আক্তার তিন মাস বয়সী কন্যাকে নিয়ে আসেন এই হাসপাতালে। তিনি জানান, কয়েক দিন ধরে তার শিশুর ঠান্ডাজনিত রোগ। কয়েক দিন ধরে চিকিৎসা চলছে।
মতলব সদর উপজেলা থেকে ছয় মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন খোদেজা বেগম। তিনি জানান, চার-পাঁচ দিন ধরে মেয়ের বমি আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্যচিকিৎসক দেখানোর পরও সারেনি। তাই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীতে পূর্ণ। বারান্দায় চলছে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা। রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। আবার অনেক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় ডায়রিয়া ওয়ার্ডে সামনের খালি জায়গাতেই চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নওগাঁও গ্রামের শিখা বেগম জানান, তাঁর ছয় মাসের মেয়ে হুমায়রা আক্তারকে গত শুক্রবার এখানে ভর্তি করিয়েছেন। চিকিৎসকেরা খাওয়ার স্যালাইন ও বেবি জিংক ট্যাবলেট খেতে দিয়েছেন। তার অবস্থা উন্নতির দিকে।
হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রশেখর বলেন, শীতের সময়ে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একটু বেশি বাড়ে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।