গৌরনদী উপজেলার বার্থী উলুমে দ্বীনিয়া কওমী মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের এক শিক্ষককে অবরুদ্ধ ও কিতাব বিভাগের একাধিক ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আহত হাফেজ জাহিদুল ইসলামকে (২২) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাদ্রাসার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক ও আহত ছাত্ররা জানান, নুরানী বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী সম্প্রতি কিতাব বিভাগের ছাত্র মো. শাহ্জালাল ও মো. মাহামুদকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে গত রোববার বিকেলে কিতাব বিভাগের ছাত্র শাহ্জালালকে কিলঘুষি মেরে নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ান। এ ঘটনার বিষয় সোমবার মাদ্রাসার মুহতামিম মুফ্তি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে বিচার দেয় ছাত্ররা। এতে শিক্ষক মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে কিতাব বিভাগের মো. রফিকুল ইসলাম, মাহামুদ হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে। এতে কেতাব বিভাগের ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষক মানিককে ধাওয়া করে। শিক্ষক মানিক দৌড়ে মাদ্রাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে ছাত্ররা তাকে আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
বিক্ষুব্ধ কিতাব বিভাগের ছাত্ররা বিচার দিতে শিক্ষক মানিকের মামা ও বার্থী কওমী মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্জাহান প্যাদার বাড়িতে যায়। এ সময় শিক্ষক মানিক ও বহিরাগত ১৫-২০ যুবক হাতুড়ি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নালিশ দিতে যাওয়া ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কিতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ জাহিদুল ইসলাম, হাফেজ হাফিজুর রহমান, হাফেজ আবু ইউসুফ, হাফেজ মো. সোয়াইবকে আহত করে। এ ঘটনায় কিতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ মো. সোয়াইব বাদী হয়ে সোমবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারী বলেন, ‘দুজন ছাত্র বেয়াদবী করায় বকাঝকা করেছি। আমার ও মাদ্রাসার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কতিপয় ছাত্র কুৎসা রটাচ্ছে।’
মাদ্রাসার মুহ্তামিম মুফ্তি আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্জাহান প্যাদার নির্দেশে কিতাব বিভাগের ক্লাস অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছি। সোমবার রাতে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত হোসেনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ্জাহান প্যাদা বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।