হোম > ছাপা সংস্করণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবার শঙ্কা

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি  

গত বছরের আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড, বালুখালীর একটি ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাদ্রাসায় একসঙ্গে আলোচিত ছয় খুনের পর গেল আট মাস রাতের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো।

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাতে পরপর দুটি পৃথক হত্যাকাণ্ডে ভয় ও শঙ্কায় রয়েছেন ক্যাম্পে বসবাসরত সাধারণ রোহিঙ্গারা।

ঘটনাস্থলগুলোর আশপাশের রোহিঙ্গাদের দাবি, ক্যাম্পের রাত্রিকালীন নিরাপত্তার কথা ভেবে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত এপিবিএনের নেওয়া স্বেচ্ছায় পাহারা কার্যক্রমে যুক্ত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের ভয়ভীতি দেখাতে দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড, গুম ও মারধরের ঘটনা ঘটাচ্ছে।

প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮-এর বি-ব্লকে কর্মরত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের পাহারা দেওয়ার স্থান নির্দেশের পাশাপাশি অন্যান্য দায়িত্ব বণ্টন করছিলেন সেই ব্লকের প্রধান মাঝির দায়িত্বে থাকা আজিম উদ্দিন।

এই সময় দুর্বৃত্তরা অতর্কিত আজিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার পাশাপাশি অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও এপিবিএনের বরাতে জানা গেছে।

ঘটনাস্থলে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাব-ব্লকের এক রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে দুই পথ দিয়ে এসে এক হওয়া ১৫-২০ জনের অস্ত্রধারী একটি দল এম-৯ ব্লকে আমাদের প্রতিদিনের বৈঠকে এসে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ায়। তাদের একজন আজিম উদ্দিনকে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। পরে কিরিচ (ধারালো অস্ত্র) দিয়ে আঘাত করে। এ সময় প্রাণভয়ে অনেকেই ঘটনাস্থল পালিয়ে যায়।’

এম-৯ ব্লকের বাসিন্দা ইউনুস (৩৪) নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনার পর থেকে আমরা রাতে শান্তিতে থাকতে পারছি না। রাতে পাহারায় যেতে আমাদের ভাইরা ভয় পাচ্ছে। পরিস্থিতি ভালো না।’

এদিকে, আজিম উদ্দিনের মৃত্যুর পরদিন উখিয়া থানায় একটি মামলা করেন নিহতের স্ত্রী সমসিদা। ওই রাতেই এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এপিবিএন-৮।
আজিম উদ্দিন হত্যার এক দিন পর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মোহাম্মদ সোমেন (৩০) নামে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘উখিয়া সদরের পার্শ্ববর্তী মধুরছড়ার ৪ নম্বর ক্যাম্প থেকে হাত-মুখ বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় সোমেনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ ক্যাম্পটির সি-ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ সলিম বলেন, ‘রাতে ব্লকের দুই যুবককে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তাদের উদ্ধার করতে সোমেন এগিয়ে যায় বলে শুনেছি। সকালে উঠে তার লাশ পাওয়া গেছে।’

২০২১ সালের অক্টোবরে বালুখালীর ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গভীর রাতে সংঘটিত আলোচিত সিক্স মার্ডারের পর প্রথমে শফিউল্লাহ কাটা (ক্যাম্প-১৬) ও জামতলী ক্যাম্পে (ক্যাম্প-১৫) রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে রাত্রিকালীন নিরাপত্তায় পাহারা কার্যক্রম শুরু করে এপিবিএন-৮।

রাত্রিকালীন নিরাপত্তায় পরের মাসেই এপিবিএনের আওতাধীন উখিয়ার ১১টি ক্যাম্পের ৬৪টি ব্লক ও ৭৭৩টি সাব-ব্লকের প্রায় ৩ হাজার ৮ স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত হলে পরিধি বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাবে উন্নতি ঘটে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার।

পরপর দুই রাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এপিবিএনের কর্মকর্তারা বলছেন, পালিয়ে থাকা রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তরা কৌশলে রাত্রীকালীন পাহারা কার্যক্রমকে দুর্বল করার পাশাপাশি ক্যাম্পের পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসাইন জানান, আজিম উদ্দিন হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন। রাত্রিকালীন নিরাপত্তা কার্যক্রমকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা রুখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়ে তৎপর আছে এপিবিএন। 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ