রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে চার দিন ধরে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে হাসপাতালে আসা রোগীসহ চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
গতকাল রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পানির অভাবে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার কর্মরত চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের বাইরের টিউবওয়েল থেকে বালতি করে পানি এনে জরুরি বিভাগ চালাচ্ছেন তাঁরা। যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁরা পানির অভাবে শৌচাগার ব্যবহার করতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। চার দিন অতিবাহিত হলেও পানি সরবরাহ করা শুরু হয়নি। এ জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনেরা বলছেন, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের পাম্পটি বিকল হয়ে যায়। এতে পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চার দিনেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের লোকজন আসেননি। এ অবস্থায় রোগীরা চিকিৎসা নিতে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। ৫০ শয্যার এই হাসপাতাল এখন প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার রাওথা এলাকার সখিনা খাতুন বলেন, তিন দিন হয়ে গেল তাঁর মা টাইফয়েড জ্বর নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি। শৌচাগারে পানি না থাকায় অসুবিধা হচ্ছে। অন্য কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতালে চিকিৎসার করানোর মতো আর্থিক অবস্থা তাঁদের নেই।
পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রুনা খাতুন বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রন্ত রোগী নিয়ে তিনি হাসপাতালে আছেন। পানি না থাকায় শৌচাগার ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার মাহমুদা খানম জানান, ‘চার দিন ধরে পানি সরবরাহ নেই। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম রবিন জানান, ‘হঠাৎ করে পাম্পটির ত্রুটি দেখা দেওয়ায় পানি সরবরাহ বন্ধ আছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানি সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। কাজেই কি সমস্যা কিংবা কারা এটা তদারক করে, কিছুই জানি না।’