হোম > ছাপা সংস্করণ

উলের কাজে স্বপ্ন পূরণ

রাব্বিউল হাসান, কালাই (জয়পুরহাট)

সাবিহা খাতুনের স্বপ্ন ছিল গ্রামের মানুষের অবসরের সময়টাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ঘটানোর। কিন্তু কী করা যায়, সেটাই ভেবে পাচ্ছিলেন না। শেষে মায়ের কাছ থেকে শেখা উলের কাজটাকেই স্বাবলম্বী হওয়ার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথ হিসেবে বেছে নেন। এই পথ ধরেই সাবিহার সেই স্বপ্ন এখন ডানা মেলেছে। তাঁর হাত ধরে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার নারীরা।

সাবিহা জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও আনোয়ারা হোসেনের ছোট মেয়ে। আনোয়ারা হোসেন ছিলেন হস্ত ও কারুশিল্পে পারদর্শী একজন গৃহিণী। উলের সুতা, সামারিয়ান সুতা আর ক্রুশ কাঁটা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরিতে বেশ দক্ষ। ছোটবেলায় মায়ের কাছেই এই কাজে হাতেখড়ি সাবিহার। শেষে মায়ের থেকে শেখা এই বিদ্যা দিয়েই স্বাবলম্বী হওয়ার পথ বেছে নেন তিনি।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জয়পুরহাট থেকে গত বছরের অক্টোবরে শিল্প উদ্যোক্তা উন্নয়ন শীর্ষক একটি পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন সাবিহা। এরপর গ্রামে ফিরে প্রথমে পাঁচজন নারীকে হাতে-কলমে ক্রুশ কাঁটা দিয়ে বুননের মাধ্যমে উলের পণ্য ও অন্যান্য জিনিস তৈরির প্রশিক্ষণ দেন। ধীরে ধীরে সাবিহার উদ্যোগে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ‘সোহা নারী কল্যাণ সংস্থা’ নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান তিনি। এখন তাঁর সরাসরি সহযোগিতায় এই কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন গ্রামের অর্ধশতাধিক নারী।

সাবিহা জানান, প্রথম দিকে বাবার বাড়িতে শুরু করা এই কর্মকাণ্ডে সার্বক্ষণিক তদারকি করতেন। কিন্তু এখন সাংসারিক কাজে জয়পুরহাটে অবস্থান করায় সপ্তাহে এক-দুই দিন সময় দেন। তাঁর সংগঠনের নারীদের তৈরি শীতের চাদর, পঞ্চ, মেয়েদের বেণি টুপি, ছেলেদের টুপি, মেয়েদের ফুল টুপি, পাপশ, টেবিল ম্যাট, টেবিল রানার, বোতল কভার, টিস্যু বক্স কভার, কুশন কভার, মশারি কভার, লেডিস ব্যাগ, মোবাইল ব্যাগ, বেবি নেট, বাচ্চাদের জামা, কটি ইত্যাদি পণ্য এরই মধ্যে বাজারে স্থান করে নিয়েছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে এসব পণ্য। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও চাহিদামাফিক পণ্য সরবরাহ করে এই সংগঠন। অনলাইনে শুধু দেশের মধ্যেই নয়, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া থেকেও ফরমাশ আসছে।

সাবিহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্কুলে পড়ার সময় থেকেই স্বপ্ন ছিল গ্রামের মানুষের কল্যাণে কিছু করব। এত দিনে তেমন একটি কাজ শুরু করতে পেরেছি। এই কাজকে গ্রামীণ নারীদের মধ্যে আরও বিস্তার ঘটাতে চাই। সরকারি সহযোগিতা পেলে আর যোগাযোগের সুব্যবস্থা গড়তে পারলে এই খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।’

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জয়পুরহাট জেলা উপব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাবিহা খাতুন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হয়ে তাঁর ব্যবসার কলেবর বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি নিজে কেবল স্বাবলম্বী হননি, তাঁর মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাঁর যদি কোনো ধরনের সহযোগিতা ও অধিকতর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়, আমরা তা দিতে চেষ্টা করব।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ