নাটোরের নলডাঙ্গার বাজারগুলোতে মাত্র সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫ টাকা কমেছে। বর্তমানে ২৫ থেকে ২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনছেন কৃষক।
কৃষকদের দাবি, চারা জাতের নতুন পেঁয়াজ বাজারজাত শুরুর মুহূর্তে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এতে কমছে দাম। কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি করেছেন তাঁরা।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর নাটোর জেলায় ৪ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৭৫৬ হেক্টর জমিতে। আর জেলায় প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
নলডাঙ্গার হাট ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে নাটোরের বৃহৎ পাইকারি হাটবাজারগুলোতে চারা জাতের নতুন পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহেও ৩৫-৩৭ টাকা বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৬ টাকায়।
ঠাকুর-লক্ষ্মীকুল গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ফলে দাম কমে এসেছে। উৎপাদন খরচ ৩০ টাকা হলেও বর্তমান দামে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাবেন বলে জানান তিনি।
মাধনগর গ্রামের কৃষক আব্দুর রব বলেন, তাঁর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে খরচ হয়েছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে গড়ে ৬০ মণ। এ পেঁয়াজ শুকালে প্রায় আরও ১০ মণ কমে যাবে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী লোকসান হবে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারাবেন তিনি।
ব্যবসায়ী বাবু বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ফলে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় চাহিদা কমেছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম কমছে। আগামী সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ হাটগুলোতে বেড়ে যাবে। ফলে আরও দাম কমতে পারে।
আড়তদার মাহবুর রহমান বলেন, এ সপ্তাহে চারা পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া দেশির পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বাড়ায় মোকামগুলোতে চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম কমছে।
নাটোর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাহমুদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় লোকসান না হলেও তেমন লাভ হবে না। এ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়।