আশঙ্কা ছিল ভোটের দিন রক্তাক্ত পরিস্থিতি হবে ত্রিপুরায়। তবে সেই ছবি দেখা যাচ্ছে ভোট হয়ে যাওয়ার পর। গত বৃহস্পতিবার ভোট শেষের পর থেকে যে হামলা শুরু হয়েছে, তা থামার লক্ষণ নেই। ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন শাসক ও বিরোধী দলের সমর্থকেরা। রাজধানী আগরতলা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংঘর্ষ ও বোমাবাজির অভিযোগ আসছে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন পুলিশ কর্মী ও আধা সেনা জওয়ানেরা। আর সাধারণ মানুষ রয়েছে চরম আতঙ্কে।
ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, কংগ্রেস ও বামেরা সম্মিলিতভাবে হামলা করছে। অন্যদিকে, বাম ও কংগ্রেসের অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে বিজেপি-আশ্রিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে তাদের সমর্থকদের ওপর। ভোট দিতে না যাওয়ার আদেশ না মানায় আক্রান্ত হচ্ছে জনতা।
অবশ্য রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা কিরণ গিত্তের দাবি, ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। ভোট-পরবর্তী হিংসা রোধেও প্রশাসন সচেষ্ট। তবে কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায়বর্মণের অভিযোগ, ভোটে হেরে যাওয়ার ইঙ্গিত পেয়েই বিজেপি-আশ্রিত সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব শুরু করেছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি নেত্রী পাপিয়া দত্ত পাল্টা দাবি করেছেন, ভোটে বিজেপিকে হারাতে পারবে না বুঝে এখন গুন্ডামি শুরু করেছে বাম ও কংগ্রেসের সমর্থকেরা।
পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ কুমারঘাটে। কংগ্রেস কার্যালয়ে আগুন ধরানো হয়েছে। একের পর এক বিধানসভা থেকে হামলার খবর আসছে। মুখ্যমন্ত্রীই ড. মানিক সাহার দাবি, সিপিআইএম ও কংগ্রেসের সন্ত্রাসীরা হামলা করছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহত বিজেপি সমর্থকদের দেখে এসেছেন। সংঘর্ষে জখম বাম সমর্থকদের সঙ্গে হাসপাতাল গিয়ে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি বলেন, সতর্কতার সঙ্গে ফলাফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রাজ্যবাসী গণতন্ত্র ফেরাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট দিয়েছেন। এতেই বিজেপি আতঙ্কিত।
এদিকে ত্রিপুরা নির্বাচনের ভোট গণনা হবে আগামী ২ মার্চ। তার আগেই যেভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।