দিনাজপুর চিরিরবন্দরে সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলায় গত বছরের মতো এবারও রবিশস্যের চাষাবাদে নতুন যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। কৃষি অফিসের সহায়তায় ৬৫ কৃষক ৬৫ বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। প্রতি বছর ১৪ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। যে কারণে দেশের প্রচুর পরিমাণ মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সেটি নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে। আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই প্লটগুলো পর্যবেক্ষণ করছি ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, তেলজাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি ও রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৬৫ বিঘা জমিতে ৬৫ কৃষক বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সহায়তায় এর আবাদ শুরু করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার সাতনালা, আলোকডিহি, আব্দুলপুর ও ইসবপুরে ধান, ভুট্টা ও গমের আবাদের সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরাও।
উপজেলার সাতনালা গ্রামের কৃষক মাসুদ জানান, ‘কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যাবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি শরীরের কোলেস্টেরল ঠিক রাখে। কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানি সরাসরি এর বীজ কিনে নেবে। কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষকেরা এটি কোথায় বিক্রি করবেন সেটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ থাকবে না। আগামীতে এর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।