প্রতিবন্ধী মেয়েটি শারীরিক অক্ষমতা ডিঙিয়ে পড়ছিল নবম শ্রেণিতে। সদাহাস্যোজ্জ্বল এই মেয়ের জীবনেই নেমে এসেছে অন্ধকার। ধর্ষণের শিকার হয়ে সপ্তাহখানেক চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে। এখন লোকলজ্জায় বন্ধ হয়ে গেছে তার বিদ্যালয়ে যাওয়া।
উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত ৫ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কালছার ইসলাম কাজল (৩০) বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনিরাম কাজি (মালতোলা) গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও কাজল এখনো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি মেয়েটির পরিবারের। অন্যদিকে ভুক্তভোগী এক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না বলে তার শিক্ষকেরা নিশ্চিত করেছেন।
মেয়ের ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। মামলা করার পর এক মাস হচ্ছে, বিচার পাচ্ছি না। ঘটনার পর থেকে মেয়ে আর স্কুলেও যাচ্ছে না। ছেলের পক্ষে কয়েকজন প্রভাবশালী মাতব্বর যোগাযোগ করছেন আমাদের সঙ্গে। তাঁরা ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। তা না হলে আমরা নাকি কিছুই করতে পারব না তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে খুব টেনশনে আছি। সত্যি কথা বলতে, কী করব আমরা বুঝতে পারছি না। শুনেছি, ছেলের আরও বউ আছে। আবার আমার মেয়ের বিয়ের বয়সও হয়নি। বিয়ে দিলে আবার সেখানে সংসার টিকবে কি না, সেটাও অনিশ্চিত। পুলিশ যদি তাঁদের কথায় আসামি না ধরে তাহলে আপস ছাড়া অন্য কোনো পথও দেখছি না আমি।’
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটি ৫ সেপ্টেম্বর কোচিংয়ে যাওয়ার পথে কাজল তাকে কৌশলে একটি নলকূপের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে স্থানীয় মাতব্বররা ১০ হাজার টাকা আদায় করে কাজলকে ছেড়ে দেন। সে সঙ্গে মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যান। পরে রক্তক্ষরণ দেখে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। আসামি মোবাইল ফোন ব্যবহার না করার কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আসামি ধরতে পুলিশ তৎপর আছে।’