হোম > ছাপা সংস্করণ

সংকট বাড়ছে সাইকেল শিল্পে

আবু সাইম, ঢাকা

দুই দশক আগেও দেশে বাইসাইকেল ছিল পুরোটা আমদানিনির্ভর। শতভাগ আমদানিনির্ভর খাতটিতে এখন স্থানীয় উৎপাদনের আধিপত্যের পথে রয়েছে। স্থানীয় বাজারে দেশের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ উৎপাদন করছে দেশীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। দেশে উৎপাদিত বাইসাইকেল রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের ১০ দেশসহ ১২টি দেশে। ২০ দেশে যাচ্ছে সাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশ। তবে সাম্প্রতিক জ্বালানি-সংকটে দেশীয় কোম্পানিগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে রপ্তানিও কিছুটা নেতিবাচক হয়েছে।

উৎপাদকেরা বলছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও বর্তমানে দেশে বাইসাইকেলের আনুমানিক চাহিদা বছরে ২০ লাখ পিস। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ আমদানি করতে হয়।

দেশে বার্ষিক বাজার প্রায় ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার কোটির টাকার মতো। খাতটিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮ শতাংশ। করোনায় স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও যানজটে নিরাপদ যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার বাড়ায় চাহিদা বেড়েছে আগের তুলনায় ২৫ শতাংশ। কারখানাসংশ্লিষ্টরা জানান, বাইসাইকেল উৎপাদন ও বিপণনে বর্তমানে ৮ হাজারের বেশি জনবল কর্মরত। বর্তমানে ছয়টি কোম্পানি সাইকেল উৎপাদন করছে—আলিটা, মেঘনা, প্রাণ-আরএফএল, জার্মান বাংলা, করভো এবং নর্থ বেঙ্গল।

বাংলাদেশ বাইসাইকেল অ্যান্ড পার্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও মেঘনা গ্রুপের পরিচালক লুৎফুল বারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশে সাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। চাহিদার অর্ধেকের মতো আমদানি করা সাইকেল দিয়ে মেটানো হয়। সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে রপ্তানির বাজারও বড় হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক জ্বালানি-সংকটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে সামনের দিকে রপ্তানি কমার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় জ্বালানি-সংকটের সমাধানের পাশাপাশি সাইকেলের যে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প রয়েছে, সেখানে সরকারের নীতিসহায়তা দিতে হবে।

দুরন্ত বাইসাইকেলের প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এর একটি দেশীয়, জ্বালানি-সংকট। এতে দিনে চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ-সংকটে পড়তে হচ্ছে, যা উৎপাদন ব্যাহত করছে। আর দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ বৈশ্বিক, অর্থনৈতিক সংকট। আমদানিকারক দেশগুলোতে সংকটের কারণে, বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে কিছু রপ্তানি আদেশ স্থগিত হয়েছে। এ জন্য রপ্তানিও কিছুটা কমছে।’

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০০০ সাল থেকে বাইসাইকেল রপ্তানি শুরু হয়। প্রথম দিকে এ খাত থেকে তেমন আয় না হলেও ২০০৮ সাল থেকে বাড়তে শুরু করে রপ্তানি।

ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশ বর্তমানে ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক এবং বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম রপ্তানিকারক। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ বাইসাইকেল চলছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাস্তায় রাস্তায়। ২০১৪ সালে প্রায় ৬ লাখ সাইকেল রপ্তানি হয়, যা বর্তমানে ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। এতে দিনে দিনে রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। যার বড় অংশের গন্তব্য ইউরোপের দেশগুলো। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাইসাইকেল রপ্তানি করে ১৩ কোটি ডলার বা ১ হাজার ১২১ কোটি টাকা সমমানের বিদেশি মুদ্রা আয় করেছে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ অর্থবছরে এ খাতে আয় হয়েছে ১৬ দশমিক ৭৯ কোটি ডলার বা দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি, যা আগের বছরের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি। তবে চলতি বছরের প্রথম দু-তিন মাসে কিছুটা নেতিবাচক রয়েছে সাইকেল রপ্তানি। এ সময় ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ কম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীনের সঙ্গে সমস্যা হওয়ায় বিকল্প বাজার খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো। এসব দেশের ক্রেতারা বর্তমানে কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কা থেকে সাইকেল কিনতে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এ খাতের রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজন সরকারের নীতিসহায়তা। রপ্তানিকারকদের জন্য বন্ড সুবিধার পাশাপাশি নগদ সহায়তা, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পুনরায় জিএসপি সুবিধা আদায় ও সম্ভাবনাময় দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়াতে পরিকল্পনা নিতে হবে। এ ছাড়া এ খাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি গড়ে না ওঠায় এই শিল্প প্রসারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, রপ্তানিও বাড়ছে না। আমদানি করা কাঁচামাল সংকটের পাশাপাশি জাহাজ ভাড়াও অনেক বেশি।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, রপ্তানির পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন দিয়েই দেশের বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব। মহামারি করোনা বাইসাইকেল রপ্তানিতে শাপে বর হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ