মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে খাদ্যগুদাম-পশ্চিম বাজার বাইপাস সড়কে প্রায় ছয় মাস ধরে পানি জমে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার প্রায় ৩০টি বাড়ির সামনে ও উঠানে পানি জমে আছে। এসব বাড়ির বাসিন্দাদের ময়লা পানি দিয়ে চলাচল করতে হয়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত মার্চ মাস থেকে বৃষ্টির পানি জমে আছে এ সড়কে। সড়কের দুই দিকের ৩০টি পরিবার টানা ছয় মাস ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। কোনো কোনো বাড়ির বাসিন্দারা সামনে বালুর বস্তা সারিবদ্ধভাবে রেখে চলাচল করছেন। কিন্তু কোনো যানবাহনের চালক পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে রাজি হন না। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ময়লা পানি মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়।
শমশেরনগর এ টি এম বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বশির উদ্দীন বলেন, ‘এখানে আমার বাসা ছিল। আমি বাধ্য হয়ে বাসা বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছি। এই এলাকায় এখনো আমার দুই বোনের বাসা আছে, তাঁদের বাসায় যেতে হলে ময়লা পানি মাড়াতে হয়।’
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাসার সামনে একটি ছোট কালভার্ট আছে। কালভার্টের সামনের ধানি জমি ভরাট করে বেশ কয়েকটি চারতলা ভবন নির্মাণ হয়েছে। এসব ভবনের পানি ও নালার পানি প্রবাহিত হওয়ারে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।’
মুন্না চৌধুরী নামে এক বাসিন্দা বলেন, জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বারবার সহায়তা চাইলেও কোনো সমাধান হয়নি।
এ বিষয়ে শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বলেন, সড়কটির বেশ কিছু অংশ গত ছয় মাস ধরে নিমজ্জিত থাকায় বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। সড়কের পশ্চিম দিকের জমিতে কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে নির্মাণকালে নালার পানি প্রবাহ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয় কারণে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিইডি প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রাথমিকভাবে এলাকা পরিদর্শন করেছি। সমস্যা সমাধানের জন্য একটি প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠাব।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীন বলেন, ‘শমশেরনগর খাদ্য গোদাম-পশ্চিম বাজার বাইপাস সড়কের একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরে নালার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ ও ৩০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও এলজিইডি প্রকৌশলীর মাধ্যমে নালার পানি প্রবাহ সচল করার চেষ্টা চলছে।’