মোবাইল ফোনে ট্রেন আসার খবর পেয়ে লাল-সবুজ পতাকা আর বাঁশি নিয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে দৌড়ে যান ৪৫ বছরের নাজিম উদ্দিন। তাঁর অনুপস্থিতিতে এ দায়িত্ব পালন করে তাঁর ছেলে ও স্ত্রী। তবে নাজিম উদ্দিন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো গেটম্যান নন। পেশায় তিনি একজন চায়ের দোকানদার। অন্তত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে পৌর শহরের বনপাড়া এলাকার একটি অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে সংকেত দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ লেভেল ক্রসিংয়ে নিজ উদ্যোগে একজন ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছর সেখানে স্থায়ী গেট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। গেটটি হলে তাঁকে অফিশিয়ালি দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি দেখা হবে।
জানা গেছে, জামালপুর পৌর শহরের বনপাড়া এলাকার গোরস্তান সড়কের রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংটি অরক্ষিত থাকায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বছর নাজিম উদ্দিনের চোখের সামনে একটি গাড়ি ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে যায়। অল্পের জন্য রক্ষা পান দুই ব্যক্তি। সে দিন থেকেই চায়ের দোকানের পাশাপাশি রোদ-বৃষ্টি, ঝড়ে দাঁড়িয়ে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংটি নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী কিংবা সন্তানেরা এ দায়িত্ব পালন করেন।
শহরের বনপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ঘরে রয়েছেন দুই ছেলে। ছোট একটি চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চলে তাঁর। নিজ উদ্যোগে বাঁশ, পতাকা আর বাঁশি কিনেছেন তিনি।
নাজিম উদ্দিন বলেন, এ কাজে কেউ তাঁকে সহযোগিতা করলে ভালো হতো। ট্রেন আসার খবর দেন শেভেরভিটা লেভেল ক্রসিংয়ের কর্মরতরা। মোবাইলে খবর পেয়ে গোরস্তান সড়কের রেলওয়ে ক্রসিংটি নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জামালপুর রেলওয়ে বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আবু সাঈদ হাসান জানান, চলতি বছর এখানে স্থায়ী গেট নির্মাণের কথা রয়েছে। ভবিষ্যতে গেটটি নির্মাণ হলে তাঁকে সহযোগিতা করা হবে।