করোনা মহামারির কারণে টানা বন্ধের সময় বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। বেসরকারি একটি সংস্থার জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। টানা দেড় বছর বন্ধ থাকায় ঝরে পড়েছে অনেক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে এ উপজেলার শতাধিক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। কিছু ছাত্র প্রবাসে চলে গেছে। আর প্রাথমিক-মাধ্যমিকে পড়ুয়া প্রায় ১২ ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে আসছে না। তবে কিছুদিন গেলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা শিক্ষকদের।
বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরের কত ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে, তা নিয়ে জরিপ চালাচ্ছে একটি বেসরকারি সংস্থা। আপাতত তাদের হিসাব অনুযায়ী এই দুই স্তরের প্রায় ১২ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রোমান মিয়া জানান, বিয়ানীবাজারে করোনার আগেই স্বাভাবিকভাবে ঝরে পড়ার হার ছিল ৩ ভাগ। করোনার কারণে তা বেড়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই এক দিন হয়তো আসেনি কোনো কারণে। আবার পরদিন হয়তো উপস্থিত ছিল। নানা কারণে অল্প কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকেরা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং নতুন করে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
পৌরশহরের গৌরীনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল রুমন মিয়া। তার বাবা পৌরশহরে ফেরি করে সবজি বিক্রি করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলায়। করোনার কারণে পৌরশহরে সবজি বিক্রি বন্ধ ছিল। তাই রুমনের বাবা পুরো পরিবার নিয়ে গ্রামে ফিরে গেছেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আতিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী আর আসছে না। পুরো পাঠদান হলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মৌলুদুর রহমান বলেন, ‘সঠিক জরিপ এখনো পাওয়া না গেলেও ১০ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলে অনুমান করছি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা অভিভাবকদের সঙ্গে সরাসরি বা টেলিফোনে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’