হোম > ছাপা সংস্করণ

অপ্রশস্ত সড়ক, অদক্ষ চালকে দুর্ঘটনা

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যানের চাপায় ছয় ভাইয়ের মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। কারণ, এ ঘটনা দেশবাসীকে নাড়া দিলেও মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। ছয় ভাইয়ের দুর্ঘটনার আগের দিন পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে খুটাখালীর মেধাকচ্চপিয়া এলাকায় বাস, পিকআপ ও মিনি ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে তিনজনের প্রাণহানি হয়। গত শনিবারও চকরিয়ার উত্তর হারবাং এলাকায় বাস ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন। মহাসড়কটিতে এ ধরনের ঘটনা নিয়মিত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যস্ততার তুলনায় অপ্রশস্ত সড়কের কথা বেশি উঠছে। সেই সঙ্গে বাঁক ও অদক্ষ চালকের বিষয়টিও উঠে এসেছে।

সড়ক বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ১৫৮ কিলোমিটার। দুই লেনের এ সড়কই দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারের অন্তত ৬০ লাখ মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ। এ সড়কটি পর্যটন, মিয়ানমার সীমান্ত, রোহিঙ্গা সংকট, পণ্য পরিবহন ও কক্সবাজারের কয়েকটি বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সাম্প্রতিক সময়ে খুবই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।

কক্সবাজার এনা ট্রান্সপোর্টের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবু বকর ছিদ্দিক জানান, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ বাস যাতায়াত করছে। সাপ্তাহিক ছুটি ও বিশেষ দিনে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়। এতে সড়কে চাপ বেড়ে যায়।

কয়েকটি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি পণ্যবাহী ট্রাক ও মিনি ট্রাক কক্সবাজারে ঢোকে। জেলায় রয়েছে আরও অন্তত পাঁচ হাজার পিকআপ, ট্রাক ও জিপের চলাচল।

সেই সঙ্গে জেলার আঞ্চলিক সড়ক ও উপসড়কগুলোতে বাস, মিনিবাস, অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাইক্রোবাসসহ কয়েক হাজার ছোট যান চলাচল করে। এসব যানবাহনের বেশির ভাগেরই ফিটনেস এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের মতে, অপ্রশস্ত সড়ক, অদক্ষ চালক, ট্রাফিক আইন মেনে না চলা, বেপরোয়া গতি, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, সড়কের বিভিন্ন স্থানে বাজার, যত্রতত্র গাড়ির স্ট্যান্ডসহ রাস্তা পারাপার, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, সড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানের দৌরাত্ম্য, উপসড়কগুলো থেকে হঠাৎ মহাসড়কে গাড়ি উঠে আসাসহ বেশ কয়েকটি কারণে মহাসড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা মহাসড়কটিতে চলাফেরায় স্বস্তি বোধ করছেন না। অনেকটা প্রাণ হাতে নিয়েই তাঁরা ঘর থেকে বের হয়েছেন বলে জানান। অপর দিকে চালকদের মধ্যে এ নিয়ে তেমন ভাবনা নেই। বেশির ভাগ যানই বেপরোয়া গতিতে চলতে দেখা গেছে। চালকদের স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালাতে বলা নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চালক-সহযোগীদের বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সড়ক বিভাগ মহাসড়কের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জরুরি বৈঠক করেছে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বাঁকখালী সেতু থেকে আজিজনগর পর্যন্ত এলাকায় ১৪টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব বাঁকেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। গতকাল কক্সবাজার শহর ও চকরিয়ায় হাইওয়ে পুলিশ যানবাহনের কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘ছয় ভাইয়ের নিহতের ঘটনার পর সড়কের ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও সমস্যা সামনে এসেছে। সংশ্লিষ্টদের আরও তৎপর হওয়ার দাবি জানাই।’

ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মালুমঘাট হাইওয়ে থানার পরিদর্শক শেফায়েত হোসেন।

কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানান, কক্সবাজার অংশের সড়কটি বেশির ভাগ পাহাড়ি এলাকায় পড়েছে। এতে বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। এসব বাঁকে দিকচিহ্ন সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানোর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তিনি জানান, ১৪টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করতে উচ্চপর্যায়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘অবৈধ হাটবাজার ও স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ