নওগাঁর নিয়ামতপুরে খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবার পানি কমছে। গ্রামগঞ্জে চলছে মাছ ধরা উৎসব। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই শুরু হয় মাছ ধরার পালা। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ অংশ নিচ্ছে এ উৎসবে। মাছ ধরায় ব্যবহার করা হচ্ছে ঝাঁকি জাল, ঠেলা জাল, পোলোসহ বিভিন্ন উপকরণ। অনেকেই আবার খালি হাতেই খালে-বিলে নেমে পড়ছেন। দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ ধরা। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছ হাটবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
পুরো শীত মৌসুমে গ্রামগঞ্জে মাছ ধরার এই চিত্র চোখে পড়ে। কই, শিং, মাগুর, ট্যাংরা, পুঁটি, খইলসা, শোল, টাকি, বোয়াল, চিকরা, বাইন, কাতলা মাছেই বেশি ধরা পড়ে। মিলছে সিলভার কার্প, গ্রাস কার্পসহ পুকুরে চাষ করা বিভিন্ন মাছও। বর্ষাকালে বিভিন্ন জলমহালের মাছ ভেসে গিয়ে ডোবা-পুকুর, খাল-বিল এবং নিচু জমিতে আশ্রয় নেয়। এখন ধরা পড়ছে এসব মাছ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শিব নদ ও হরিপুর বিলে সকাল থেকে মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শৌখিন মৎস্যশিকারিরা। হাতে কাজ কম থাকায় এলাকার লোকজন দলবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার করছেন।
চককেশব এলাকার মামুন বলেন, ‘এই মৌসুমে খাল-বিল, নদী-নালার পানি কমে যায়। এলাকার তরুণেরা এক জোট হয়ে মাছ ধরতে চলে যায় বিভিন্ন খালে-বিলে। একত্র হয়ে মাছ ধরতে অনেক মজা হয়। তবে দিন দিন দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরার এ ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।’
হরিপুর বিল এলাকার হারেছ বলেন, ‘সারা বছরই মাছ ধরি। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পলো দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। দলবদ্ধ হয়ে মিলিতভাবে মাছ ধরার উৎসব কখনো ভুলব না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমাদের চমৎকার একটি গ্রামীণ ঐতিহ্য হলো মাছ ধরা উৎসব। দল বেঁধে মাছ ধরাটা গ্রাম বাংলার সহজাত সম্প্রতিকে ধারণ করে।’