বরিশালের বাকেরগঞ্জ জেএসইউ মডেল হাই স্কুলের ভবন দখল করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। এই ভবনটিতে স্কুলের ভোকেশনাল ট্রেডের শিক্ষার্থীদের ক্লাস হতো। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, নিজস্ব শ্রেণি কক্ষ থাকা সত্ত্বে অন্য ভবনে গিয়ে তাদের ক্লাস করতে হয়। করোনা প্রাদুর্ভাবের পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই একতলা ভবনে পরিবার নিয়ে উঠেছেন। প্রধান শিক্ষক অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর কোয়ার্টার সংস্কার করতে হবে, তাই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ভবনটি থাকার অনুমতি দিয়েছে। তবে কমিটি এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে।
বাকেরগঞ্জ জেএসইউ মডেল হাই স্কুলের ভোকেশনাল ট্রেডের শিক্ষক নুরুল হুদা জুয়েল বলেন, তিনটি ট্রেডে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী আছে। এই শিক্ষার্থীদের ক্লাস এখন মূল ভবনের নিচতলায় হচ্ছে। ভোকেশনালের এক তলা ভবনে প্রধান শিক্ষক পরিবার নিয়ে থাকেন। কারণ তাঁর কোয়ার্টার সংস্কার হবে।
এ নিয়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয় সংলগ্ন ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সেলিম বলেন, প্রধান শিক্ষকের তো কোয়ার্টার আছে, তাঁর শ্রেণিকক্ষে থাকার কথা নয়।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ জেএসইউ মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, তার বিদ্যালয়ে ৩টি ট্রেডে ভকেশনাল ছাত্র-ছাত্রী আছে। এই শিক্ষার্থীদের ক্লাস ভোকেশনাল ভবনে হতো। কিন্তু শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় স্কুলের মূল ভবনে ক্লাস হয়। ভোকেশনাল শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ভবনে ৭-৮ মাস ধরে থাকছেন।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান, স্কুল প্রাঙ্গণেই তাঁর কোয়ার্টার আছে। কিন্তু সেটি সংস্কার করতে হবে। কোয়ার্টার সংস্কার করতে হবে তাই ম্যানেজিং কমিটি রেজ্যুলেশন করে তাকে আপাতত ওই ভবনে থাকার অনুমতি দিয়েছে।
স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের তো আলাদা বাসাই আছে, কেন ক্লাস রুমে পরিবার নিয়ে থাকবেন। তিনি ভোকেশনাল ভবনের শ্রেণি কক্ষে পরিবার নিয়ে থাকেন এমনটা আমার জানা নেই। কমিটির সভায় তাঁকে (প্রধান শিক্ষক) ক্লাস রুমে থাকার জন্য কোনো রেজ্যুলেশনও করা হয়নি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকমল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক কেন ক্লাস রুমে বসবাস করবেন? এটা তো হতে পারে না। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলব।