লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ চর আবদুল্যাহ, যা মূল ভূখণ্ড থেকে মেঘনা নদী হয়ে প্রায় ২৫ কিলোমিটারের নৌপথ নৌকা কিংবা ট্রলারে পাড়ি দিতে হয়। এ ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় ওষুধের দোকানিই একমাত্র ভরসা। এ অবস্থায় চর আবদুল্লাহ, চর গজারিয়া ও তেলির চরে বসবাসকারী নারী ও শিশুসহ হাজার মানুষ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
এ ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৩৩৪ জন এর মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৯১৬ এবং মহিলা ৪ হাজার ৪১৮ জন হলেও বাস্তবে বিচ্ছিন্ন এ দ্বীপে সবাই থাকেন না। কেননা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর দুর্যোগে টিকতে না পেরে অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। আবার অনেকে ছাড়ার পথে রয়েছেন। ভোটার অনুযায়ী এ অঞ্চলে ১৭-১৮ হাজার লোকের বসবাস হওয়ার কথা।
চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন চলছে আদিম যুগের কায়দায় চিকিৎসাসেবা, সৃষ্টিকর্তার ওপর ভর করে তাঁদের পথ চলা। কেউ ভালো হচ্ছে, কেউবা তাঁর রোগ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নোয়াখালী কিংবা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। চেয়ারম্যান বাজারের ওষুধ বিক্রেতা মো. ফরাদ ও মো. ইসমাইল হাফেজ বলেন, ‘কোনো চিকিৎসক না থাকায় সাধারণ মানুষ আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে আসেন। সেই মোতাবেক আমরা ওষুধ দিয়ে থাকি। রোগীরা আমাদের কাছে আসেন বলেই আমরা দীর্ঘ যুগ ধরে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি।’
এই বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন জানান, চর আবদুল্যাহ ইউনিয়নে কোনো নিয়োগ হচ্ছে না। সেবা দিয়ে আসে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামনাশিস মজুমদার বলেন, ওই চরে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র না থাকায় ও জনবল সংকটের কারণে দুর্গম চরে মেডিকেল অফিসার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
চরাঞ্চলে মেডিকেল অফিসারের বিকল্প নেই নচেৎ উপকূলের সাধারণ মানুষ সঠিক চিকিৎসাসেবা না পেয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করবে। খেটে খাওয়া মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপকূলবাসীর প্রত্যাশা অতি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি হস্তক্ষেপ করবেন।