আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের ঝাড়ুদার মফিজুল হক টুটুল। পাসপোর্ট অফিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাই তাঁর কাজ। নিজের পেশাকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন টুটুল। অফিসের ময়লা পরিষ্কার করার সময় ডাস্টবিনে পড়ে থাকা বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করতেন টুটুল। এসব নথি সংগ্রহ করে সেগুলো চক্রের অন্য সদস্যদের হাতে তুলে দিতেন। পরে এসবি পরিচয়ে ভেরিফিকেশনের নাম করে নানা লোকের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করত চক্রটি। এই চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের ফাইন্যান্সিয়াল ইনভেস্টিগেশন টিম।
গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে চক্রটি সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের এডিসি জুনায়েদ আলম সরকার।
এই গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আবেদন ফরম জমা দেওয়ার সময় পাসপোর্টপ্রত্যাশীরা বিভিন্ন ডকুমেন্ট সঙ্গে রাখেন। পরে কাজ শেষে সেগুলো ফেলে দেন। সেগুলোই সংগ্রহ করতেন টুটুল। এরপর বাড়ি পরিদর্শনের নামে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নিতেন। চক্রটির কাছ থেকে টাকা আদায়ে ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল ও ১১টি সিম উদ্ধার করা হয়েছে।
এডিসি জুনায়েদ আলম বলেন, চক্রটি কয়েক ধাপে কাজ করত। প্রথমে চক্রের মফিজুল হক টুটুল পাসপোর্ট অফিস পরিষ্কার করার সময়ে অফিসের বিভিন্ন কক্ষের ডাস্টবিনে পড়ে থাকা বিভিন্ন পাসপোর্ট আবেদনকারীর নথিপত্র সংগ্রহ করতেন এবং রাসেল হোসেন ইমন ও জুয়েলের কাছে সেগুলো সরবরাহ করতেন। এরপর ইমন ও জুয়েল পাসপোর্ট আবেদনকারীদের মোবাইলে কল দিয়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের কথা বলে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাবইন্সপেক্টর পরিচয় দিতেন। প্রতারণার মাধ্যমে আবেদনকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ইমন ও জুয়েল ভাগাভাগি করতেন। নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন দিতেন টুটুলকে।
অভিনব প্রতারণার বিষয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করব, কেউ প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে কোনো কিছু দাবি করলে সেই প্রতারণায় পড়বেন না। সবকিছু যাচাই-বাছাই করবেন এবং এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে পুলিশকে অবহিত করবেন।’