প্রাণের ভাষা বাংলার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের ঋণ শোধ করার সাধ্য আমাদের নেই। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে গৌরবান্বিত করার পেছনে তাঁদের আত্মত্যাগ আমরা কখনোই ভুলব না। জালিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হওয়া সালাম-রফিক-জব্বারদের আল্লাহ নিশ্চয়ই উত্তম প্রতিদান দেবেন। আমরা তাঁদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ ও আজন্ম ঋণী। সেই ঋণের বোঝা হালকা করতে হলে তাঁদের পরকালীন শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা আমাদের কর্তব্য।
ইসলামে মৃতদের কল্যাণ কামনার কিছু পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমত, তাঁদের ভালো কাজের চর্চা করা। কারণ, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থেকো।’ (আবু দাউদ) দ্বিতীয়ত, তাঁদের নামে এমন কোনো কল্যাণমূলক কাজ করা, যা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হয়। তৃতীয়ত, তাঁদের জন্য কায়মনোবাক্যে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করা, যাতে তিনি তাঁদের উত্তম প্রতিদান দেন। কারণ, মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যখন কোনো লোক মারা যায়, তখন তাঁর সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন প্রকার আমল জারি থাকে। এক. সদকায়ে জারিয়া, দুই. রেখে যাওয়া উপকারী জ্ঞান এবং তিন. তার জন্য দোয়া করে—এমন নেক সন্তান। (নাসায়ি)
সুতরাং আমরা ভাষাশহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল, দান-সদকা, কোরআন তিলাওয়াত, রোজা ও জনকল্যাণমূলক কাজের আয়োজন করতে পারি। এসব কাজ সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হবে। বিনিময়ে আল্লাহ তাঁদের কবরে শান্তি নাজিল করবেন এবং তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।
ড. মুহাম্মদ ইউছুফ: অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়