অলসতা অত্যন্ত নিন্দনীয়। অলস মানুষ সংসারে বড় কোনো অবদান রাখতে সক্ষম হয় না। পরিশ্রম ও কর্মময় জীবনযাপনই মানুষের সফলতার মন্ত্র। আমাদের চারপাশের প্রাণীরাও তাদের খাবার জোগানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে। মানুষ তো সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মানুষের জন্য কর্মহীন বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম সব সময় আলস্য পরিহার করে কাজে ব্যস্ত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে।
আমরা লক্ষ করলে দেখব, ইসলামে সবকিছুই সময়মাফিক হয়। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় নির্ধারিত। রোজার সময় নির্ধারিত। হজের সময় নির্ধারিত। এভাবে মূলত মানুষকে সময়জ্ঞান শেখানো হয়েছে। অলসতা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তিস্বরূপ। ইবাদতে অলসতা মানুষের জীবনে নিয়ে আসে অশান্তি ও হাহাকার। তাই নবী (সা.) সব সময় আলস্য থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। (বুখারি)
কাজে উৎসাহিত করার জন্যই ইসলামে ভিক্ষা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। নিজের হাতে কামাই করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিজের হাতের কামাই খাওয়া অন্য যেকোনো উপায়ে খাওয়ার চেয়ে হাজার গুণ উত্তম।’ (বুখারি)
আল্লাহ তাআলা সকল সৃষ্টির জন্য রিজিকের ওয়াদা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আর ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই, যার রিজিক আল্লাহর দায়িত্বে নেই।’ (সুরা হুদ: ৬) তবে তিনি এ দায়িত্ব ঝুলিয়ে রেখেছেন চেষ্টা ও কর্মের সঙ্গে। ফলে কেউ যদি কর্মহীন ঘরে বসে থাকে, তবে আল্লাহ তার মুখে লোকমা তুলে দেবেন না। বরং তাকে চেষ্টা করতে হবে। এ জন্যই ফরজ ইবাদত পালনের পর বান্দাকে রিজিকের অনুসন্ধানে নেমে পড়তে বলা হয়েছে। ‘জুমার নামাজের পর তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো।’ (সুরা জুমুআ: ১০)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক