হোম > ছাপা সংস্করণ

অবৈধভাবে পুকুর খনন

সম্পাদকীয়

আমাদের দেশে নানা ক্ষেত্রে দেখা যায়, সামষ্টিক স্বার্থের কাছে জয়ী হয় ব্যক্তিস্বার্থ। ব্যক্তি তার লাভ, লোভ আর স্বার্থের কারণে সামষ্টিক স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে কার্পণ্য করে না। এতে ব্যক্তির স্বার্থ উদ্ধার হলেও অনেকের জীবনে বিপদ ঘনিয়ে আসে। কিন্তু ব্যক্তির মধ্যে ন্যূনতম অপরাধ বোধ জাগে না। আবার ব্যক্তির লাভ দিয়ে জনস্বার্থকে হুমকিতে ফেলার মধ্যে ভয়ানক নির্লজ্জতা দেখা যায়। আমাদের সমাজে এ রকম ঘটনার অভাব নেই। এ ধরনের মানুষ সংখ্যায় খুবই অল্প। তবে তারাই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সংখ্যাগুরু মানুষকে বিপদে ফেলছে। আজকের পত্রিকায় মঙ্গলবার পুকুর কাটা সিন্ডিকেট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 

রাজশাহীর বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, পবা ও মোহনপুর উপজেলার তিন ফসলি জমিতে দেদার পুকুর খনন করা হচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এমনই যে তারা জমির মালিকের কাছে অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করে না। তাদের ইচ্ছেমতো জমির মালিককে টাকা গছিয়ে দিচ্ছে। আর জমির মালিকদের অসহায়ের মতো সেই টাকা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

জানা যায়, পুকুর কাটা তিনটি সিন্ডিকেট এসব এলাকায় তাদের দাপট দেখাচ্ছে। অথচ পুলিশ ও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাগমারার তাহেরপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি, আর একটিতে আছেন দুর্গাপুর উপজেলার কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি। অন্য একটি সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এরশাদ আলী ও তাঁর সহযোগী কার্ত্তিক শাহ। বোঝা যাচ্ছে, তিনটি চক্রই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত।

বাংলাদেশে নগরায়ণ ও শিল্পায়নের চাপে এমনিতেই ক্রমাগত ফসলি জমির পরিমাণ দ্রুত কমে যাচ্ছে। ফসলি জমি কমে গেলে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে। এর প্রভাব আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর এসে পড়বে। কিন্তু ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত নেতারা সেসব কথা ভুলে যান নিজ স্বার্থের কারণে। আর এ ধরনের অনিয়ম দেখার দায়িত্ব স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের লোকদের থাকলেও, তাঁরা বাড়তি আয়ের লোভে নৈতিকতাকে বিসর্জন দিতে পিছপা হন না। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে ওসব এলাকার পুকুর কাটা সিন্ডিকেট এত বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারত না।

গত বছর ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন, ২০২৪’ নামে নতুন একটি আইনের খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে। এই আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘... কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড়, নদী, খাল-বিল ও জলাশয় সুরক্ষাসহ ভূমির পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করে পরিকল্পিত জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় অনুশাসন নিশ্চিত করা।’ আইনটি থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কৃষিজমি কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। কিন্তু সেখানকার ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা উল্টো কাজ করছেন।

এখন সেখানকার অসহায় কৃষকদের জমি উদ্ধার করতে হলে, তাঁদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। প্রশাসনকেও প্রমাণ করতে হবে, তারা কারও কাছে বিক্রি হয়ে যায়নি। আমরা আশাবাদী, ঐক্যের বলেই ব্যক্তিস্বার্থ সামষ্টিক স্বার্থের কাছে পরাজিত হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ