মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় সাত মাস আগে করিমন বেগমকে (৯৫) ভর্তি করেন তাঁর ছেলেমেয়েরা। তবে এরপর থেকে তাঁরা আর নেননি মায়ের খোঁজ। বৃদ্ধা করিমন ওই হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বেডে ভর্তি আছেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, করিমন উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের ভাঙা রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত রাজেমুদ্দিনের স্ত্রী। জলিমন নামের এক মেয়ে এবং তাজেল ও জসিম উদ্দিন নামের দুই ছেলে আছে তাঁর। সাত মাস আগে তাঁরা তাঁদের মাকে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এরপর থেকে তাঁদের কেউই আর মায়ের খোঁজ নেননি।
গত বৃহস্পতিবার করিমন বেগম বলেন, ‘ওরা (ছেলেরা) মানুষের কথা শুনে আমাকে দেখতে পারে না বাবা। আমার কোনো ছেলে নাই, তোমরাই আমার ছেলে। আমারে একটু বিষ কিনে দাও, আমি খাইয়া মইরা যামু। আর আমি বাঁচতে চাই না।’
মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে খবর না নেওয়ার ব্যাপারে জানতে বৃদ্ধা করিমনের দুই ছেলের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায়নি।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বাহাউদ্দিন বলেন, ‘করিমন বেগম আমাদের হাসপাতালে প্রায় ৭ মাস যাবৎ ভর্তি আছেন। ভর্তি হওয়ার পর থেকে তাঁর ছেলে ও মেয়েরা কোনো খোঁজখবর নেননি। তিনি হাটতে পারেন না, পা ভাঙা। এ কারণে বিছানায় পায়খানা-প্রস্রাব করেন। যার ফলে পুরো কক্ষ দুর্গন্ধে ভরে গেছে।’
ডা. বাহাউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিনি যত দিন পারেন থাকুক, চিকিৎসা নিক। আমাদের আপত্তি নাই, তবে কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি ওনার দায়িত্ব নিতেন তাহলে ভালো হতো। এই সময় তাঁর পাশে আত্মীয়স্বজন থাকা প্রয়োজন।’