রোববার (আজ) ঢাকায় জরুরি কাজ থাকায় আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে শুক্রবার রাতের বাসের টিকিট করে রেখেছিলেন কলেজশিক্ষক আতাউর রহমান। উদ্দেশ্য কাজের পাশাপাশি ছোট ভাই-বোনদের সঙ্গে কিছু সময়ও কাটিয়ে আসবেন। কিন্তু হঠাৎ গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন তিনি। বাধ্য হয়ে শনিবার আন্তনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের একটি টিকিট জোগাড় করেন।
পার্বতীপুরের ছেলে সাঈদ আল সাকিব দিনাজপুরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। হঠাৎ বাস বন্ধ থাকায় শুক্রবার বাড়ি যেতে পারেননি তিনি। বাধ্য হয়ে আন্তনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে রওনা হয়েছেন।
শুধু আতাউর রহমান কিংবা সাকিব নন হঠাৎ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন গতকাল শনিবার জনগণের ভোগান্তি ছিল চরমে। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বের হয়ে পড়েন ভোগান্তিতে। গ্রামের অনেক সাধারণ মানুষ ধর্মঘটের খবর না জেনেই বের হয়ে পড়েন বেকায়দায়।
এর আগে কেরোসিন ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল থেকেই দিনাজপুরসহ সারা দেশে ধর্মঘটের ডাক দেয় মোটর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা।
শনিবার সকালে দিনাজপুর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা টার্মিনালে এসে বাস না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার প্রয়োজনের তাগিদে ২ / ৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে রওনা হন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বেপরোয়া হয়ে ওছেছে ইজিবাইক, ভ্যান, ভটভটিসহ ছোট যানবাহনগুলো। সুযোগ বুঝে এসব যানবাহনের চালকেরা সাধারণের চেয়ে ২ / ৩ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন।
শনিবার দুপুরে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ট্রেন আসার আগেই প্ল্যাটফর্মে ঢাকাগামী মানুষের ভিড়।
দিনাজপুর মোটর পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সাদেক রিয়াজ চৌধুরি পিম বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দিনাজপুরে বাস-মিনিবাস, ট্রাক-ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে না বলে জানান তিনি।