বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় নদী ভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম, পাকা রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্টসহ নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ এই তিন নদীর ভাঙনে বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে কেদারপুর ইউনিয়নের ছানি কেদারপুর, দক্ষিণ ভূতেরদিয়া, কেদারপুর, ভূতেরদিয়া, পূর্ব ভূতেরদিয়া, মোল্লার হাট, এমপির হাটসহ নদীর তীরবর্তী এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে এক সময় কেদারপুর ইউনিয়ন শুধু কাগজে-কলমে থাকবে, বাস্তবে তা চলে যাবে নদীর পেটে।
গত সোমবার সকালে কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতের দিয়া গ্রামের (মৌলবী গঞ্জ) একই বাড়ির কয়েকটি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এগুলোর একটি গ্রামের মাসুদুর রহমান রানার। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতের দিয়া গ্রামটি নদী ভাঙনে বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। আমাদের বাড়ি থেকে নদী ছিল কয়েক কিলোমিটার দূরে। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই নদীতে আমাদের বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।’
বুগঞ্জ উপজেলার মধ্যে দিয়ে সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ এ তিনটি খরস্রোতা নদী প্রবাহিত হয়েছে। আর এ তিনটি নদীই কেদারপুর ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে গেছে।
ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও ফসলি জমি। এ ছাড়া গত কয়েক বছরের নদীভাঙনে কয়েক শ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মুজাফফার প্যাদাসহ বেশ কয়েকজন জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধ না করলে নদী ভাঙন রোধ করা যাবে না।
কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম বেপারী জানান, কেদারপুর ইউনিয়নের চারদিকে নদী থাকায় প্রতিবছর বর্ষায় তীব্র ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে ইউনিয়নের মানচিত্র। নদী ভাঙন রোধে পরিকল্পিত নদীশাষন ও নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বাবুগঞ্জ-মুলাদী আসেন সাংসদ মো. গোলাম কিবরিয়া টিপু ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা ভাঙন থেকে রক্ষা করতে একটি ইন্টিগ্রেটর প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে।