জগন্নাথপুর উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কে মাটি ভরাটের কাজ করায় বৃষ্টির পানিতে কাদায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। পিচঢালা সড়কে এখন কাদা। এতে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। ফলে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, জগন্নাথপুর-আউশকান্দি-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ে প্রায় দেড় বছর আগে। ওই স্থানে বর্তমানে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। বেইলি ব্রিজের পাশে যানবাহনের চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে মূল সড়কটি সংস্কারের জন্য মাটি ভরাটের কাজ করায় বৃষ্টির পানিতে কাদায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন পথচারীরা।
আলতাবুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, ‘যে গাড়ি করে জগন্নাথপুর এসেছিলাম। সেটি কাদায় আটকে গেছে। এখন হেঁটেই বাজারে যাচ্ছি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ইছগাঁও এলাকায় একটি সেতুর কাজ চলমান। সড়ক সংস্কারকাজে মাটি ফেলে কাজ করছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স। এসব মাটি সংরক্ষিত স্থানে না রাখায় বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় সড়ক বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
এদিকে, ঢাকা-সুনামগঞ্জ সড়কে রানীগঞ্জ বাজার হয়ে কম সময়ে যাতায়াতের একমাত্র সড়ককে দু-দিন ধরে ছোট যানবাহন ছাড়া বড় যানবাহন চলাচল করছে না।
সড়কের এ নাকাল অবস্থায় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অপরিকল্পিতভাবে মাটি ফেলে রাখায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে কাদায় সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। আর কোনো বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই লোকজন চলাচল করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ থেকে প্রাইভেট কার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে আসা মোজ্জাফর আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘জরুরি কাজে ঢাকায় যাচ্ছি। এই সড়ক দিয়ে কম সময়ে যাতায়াত করা যায়। এ কারণে আসা। কিন্তু সড়কের এমন অবস্থা দেখে হতাশ হয়েছি।’
জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ সড়কের গাড়িচালক প্রকাশ মিয়া, সুহেল মিয়া, সাপানী মিয়াসহ একাধিক চালক জানান, বর্তমানে সড়কটি একেবারে চলাচল অনুপযোগী। কাদা থেকে গাড়িগুলো তুলতে তিন থেকে চারজন মিলে ঠেলতে হয়। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ ক্ষতি হচ্ছে। কাদার জন্য অনেকে আবার দু-তিন দিন ধরে গাড়ি চালাচ্ছেন না।
নারিকেলতলা ইজিবাইক সমিতির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, ‘রাস্তার যে অবস্থা, এতে গাড়ির ব্যাটারিতে খুব চাপ পড়ে। আর মোটরও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য আমার সমিতির অনেক চালক গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তাঁরা সবাই আবার দিন আনে দিন খান। এমন অবস্থায় তাঁদের রোজগার বন্ধ হয়ে বিপাকে পড়েছেন।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের সুপারভাইজার জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য এমন অবস্থা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। কাজ চলমান আছে। আশা করি দ্রুত মেরামত হয়ে যাবে।’