হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যুপথযাত্রী বাবা। তাঁর শয্যাপাশে আছেন মা। তাঁদের সামনেই এস এম সরকার ওরফে হোসাইনকে বাধ্য করা হয় নিজের গালে জুতা মারতে। এ ঘটনার তিন দিন পর মারা গেছেন তাঁর বাবা।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ। অভিযোগ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ছাত্রলীগ। দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাবা-মায়ের সামনে নিজের গালে জুতা মারতে বাধ্য করার অমানবিক এ ঘটনার ২ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, এস এম সরকার ওরফে হোসাইনের বাড়ি উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামে। তিনি স্থানীয় সাবেক সাংসদ নবী নেওয়াজের সমর্থক। বেশ কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে লেখালেখির সূত্র ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বিপাশের সঙ্গে হোসাইনের বিরোধ তৈরি হয়। ঢাকায় ছোটখাটো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন হোসাইন। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি। বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে যান হোসাইন। এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশও হাসপাতালে যান। সেখানে কথোপকথনের একপর্যায়ে বিপাশ তাঁর পা থেকে জুতা খুলে দেন। এরপর সেই জুতা দিয়ে হোসাইনকে নিজের গালে মারার নির্দেশ দেন তিনি। তখন হোসাইন ছাত্রলীগ সভাপতির পা ধরে কয়েকবার ক্ষমাও চান। কিন্তু তাতে আরিফুজ্জামানের মন গলেনি। অসহায় হোসাইন তখন অসুস্থ বাবা এবং উপস্থিত মায়ের সামনে নিজের গালে নিজেই জুতা মারেন।
হোসাইনের বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ ডিসেম্বর মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে তিনি মারা যান। ওই দিন রাতে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রানা হামিদ জানান, অসুস্থ বাবার সামনে হাসপাতালে এস এম সরকার ওরফে হোসাইনের গালে জুতা মারতে বাধ্য করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ। বিষয়টি জানার পর তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।