তিস্তায় কমে এসেছে পানি। নদীর বিশাল এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে ধু ধু বালুচর। ভরা তিস্তার যেখানে নৌকা চলত, পানি শুকিয়ে গিয়ে এখন সেখানে চলছে ঘোড়ার গাড়ি। পীরগাছার চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনের ভরসা হয়ে উঠেছে এই যান।
চরাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে এক সময় যাতায়াত ও কৃষি পণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। শুষ্ক মৌসুমে কেউ অসুস্থ হলেও হেঁটে হাসপাতালে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। সেই দিন এখন আর নেই। ধু ধু বালু চরে অনায়াসেই চলছে ঘোড়ার গাড়ি। বিশেষ করে ফসল পরিবহনে এর কোনো বিকল্প নেই। চরবাসীর ভরসা এসব ঘোড়ার গাড়ি অনেক পরিবারের জীবন ধারণের অবলম্বনে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্তমানে চরাঞ্চলের উৎপাদিত ফসল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে ঘোড়ায় টানা গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব গাড়িতে লাগানো আছে টায়ারের চাকা। এই গাড়িগুলো পণ্য সামগ্রী নিয়ে অনায়াসে চরের বালুর ওপর দিয়ে চলতে পারে। প্রতিটি গাড়িতে ১৫ থেকে ২০ মণ কৃষিপণ্য পরিবহন করা যায়। চরাঞ্চলের মানুষ এই গাড়িতেই বালু পেরিয়ে তাঁদের গন্তব্যে যাতায়াত করছেন।
গাড়িচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলে পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ঘোড়া মালামাল টানায় যথেষ্ট পারদর্শী। এগুলো স্বচ্ছন্দে বালুতে হাঁটতে পারে। এসব ঘোড়ার দামও বেশি নয়। মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় একটি ঘোড়া পাওয়া যায়।
আরেক চালক আবদুল জলিল জানান, গড়ে প্রতিদিন একটি গাড়ি থেকে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। বর্তমানে চরাঞ্চলে আবাদকৃত ধানসহ অন্যান্য ফসল পরিবহন হচ্ছে বেশি। এতে আয়ও বেশ ভালো হচ্ছে। তবে বর্ষাকালে নৌকা চলে বলে তাঁদের আয় কমে যায়।
এ বিষয়ে ছাওলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাদশা আলম বলেন, চরে যেখানে অন্য যানবাহন চলতে পারে না, সেখানে ঘোড়ার গাড়িই ভরসা। চরের কৃষকেরা অল্প খরচে তাঁদের পণ্য পরিবহন করতে পারছেন।