শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক ও নারীনেত্রী হিসেবে আমাদের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন হেনা দাস। যে গুটিকয় নারী তাঁদের সময়ের গণ্ডি ভাঙতে অগ্রসর ভূমিকা রেখেছিলেন, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
ছাত্রজীবনে ব্রিটিশবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের সিলেটে জন্ম নেওয়া হেনা দাস। পরবর্তী সময়ে তিনি নানকার বিদ্রোহ, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন মহিলা পরিষদের সভানেত্রী। এসব আন্দোলন সংগ্রামের বাইরে হেনা দাসের অন্যতম পরিচয় তিনি ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী মানুষ।
প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে নিজের চিন্তাশক্তিকে আবদ্ধ রাখেননি তিনি। নারীদের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যেখানে আত্মশিক্ষায় শিক্ষিতকরণে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি।
১৯৫৮ সালে হেনা দাস ঢাকার গেন্ডারিয়া মনিজা রহমান বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি নেন। বিএড ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৬১ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক পদে নারায়ণগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর মহাখালী ওয়ারলেস স্টেশন স্কুলেও তিনি কিছুদিন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় তিন যুগ শিক্ষকতার পর হেনা দাস ১৯৮৯ সালে শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর নেন।
হেনা দাস লিখিত বইয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ‘শিক্ষা ও শিক্ষকতা জীবন’, ‘উজ্জ্বল স্মৃতি’, ‘স্মৃতিময় দিনগুলো’, ‘নারী আন্দোলন ও কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা’, ‘স্মৃতিময় ’৭১’ এবং ‘চার পুরুষের কাহিনী’।
২০০৯ সালের ২০ জুলাই ৮৫ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।