নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও রাজবাড়ীর পদ্মায় চলছে ইলিশ শিকার। দেখে মনে হচ্ছে ইলিশ ধরার উৎসব। কেউ জাল টানছেন, কেউ মাছ প্যাকেটে ভরছেন। প্রশাসনের ট্রলারের শব্দ পাওয়া মাত্রই নিরাপদ জায়গায় চলে যাচ্ছে। আটক, জেল-জরিমানা করেও জেলেদের থামানো যাচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত আট দিনে জেলার ৮৫ কিলোমিটার পদ্মা নদীতে ১২০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৩৩ জন জেলেকে জেল-জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপরও জেলেদের ইলিশ শিকারে থামানো যাচ্ছে না।
সরেজমিনে গতকাল বুধবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কয়েকশ নৌকা রয়েছে মাঝপদ্মায়। ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকায় জেলেরা ইলিশ ধরায় ব্যস্ত। প্রশাসনের ট্রলারের শব্দ পেয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাচ্ছে নৌকা। পদ্মায় এ দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে চোর-পুলিশ খেলা চলছে।
জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা যেন ইলিশ শিকারে না যান, সে জন্য জেলার ৪ হাজার ৭০০ জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
জেলে রাতুল হালদার বলেন, ‘পেটের দায়ে ইলিশ ধরতে নদীতে নামছি। সরকার ২০ কেজি করে চাল দিচ্ছে। তা দিয়ে কয়দিন সংসার চলব? সংসারে মানুষ ছয়জন। এই ২০ কেজি চালে চলা অসম্ভব।’
সুবল কুমার নামে আরেক জেলে বলেন, ‘জেল-জরিমানার ভয় উপেক্ষা করেই ইলিশ শিকারে নেমেছি। পেট তো জেল-জরিমানা মানে না। মাছ না ধরলে না খেয়ে মরতে হবে। এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি।’
হাসমত নামে আরেক জেলে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরতে চাই না। কিন্তু খাবারের ব্যবস্থা কে করবে। একদিন না খেয়ে থাকলে কেউ খবর নেবে না। প্রতিবছর ২০ কেজি করে চাল দেয় এতে কিছু হয় না। চালের সঙ্গে তেল, লবণ, তরকারি এসবের ব্যবস্থা করে দিক। তাহলে নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে নামব না।’
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, ইলিশ রক্ষায় তাঁরা তৎপর রয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মাছ ধরা অবস্থায় জেলেদের আটক করে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। তাঁদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।