নেছারাবাদে নৌযান শ্রমিক লীগ নামে একটি সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে মাসে ১০ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তুলছেন জাকির হোসেন ব্যাপারী (৪২) নামে এক ব্যক্তি। নৌযান শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ কল্যাণের কথা বলে উপজেলার দুই শতাধিক ছোট–বড় দূরপাল্লার নৌযান থেকে প্রতি মাসে ওই চাঁদা তোলা হচ্ছে।
রুট পারমিট, শ্রমিক কল্যাণ, দপ্তর ম্যানেজের কথা বলে নানা অজুহাতে প্রত্যেকটি ট্রলার থেকে মাসে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা তুলছেন জাকির হোসেন। শ্রমিকেরা নিরুপায় হয়ে কেউ আবার ভবিষ্যের কথা চিন্তা করে ওই ব্যক্তিকে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ট্রলার মালিক সহিদুল ইসলাম (৪০) বলেন, ‘জাকির হোসেন ব্যাপারী নৌযান শ্রমিক লীগের পরিচয়ে আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিয়েছেন। বিনিময়ে আমাকে সংগঠনের একটি কার্ড দিয়েছেন। ওই কার্ডে তাঁকে প্রতি মাসে ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। ওই কার্ড না নিলে নাকি নৌপথে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই ঝামেলা এড়াতে মাসে ৫০ টাকা চাঁদা দিচ্ছি।’
ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ব্যাপারী বলেন, ‘আমার সংগঠন একটি কেন্দ্রীয় সংগঠন। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সংগঠনে লোক ভর্তি করাচ্ছি আর টাকা নিচ্ছি।’
চাঁদার টাকা কোথায় খরচ হয় জানতে চাইলে জাকির বলেন, ‘সংগঠন চালাতে অনেক খরচ আছে। আমার সংসার আছে। তারপরে কেন্দ্র থেকে মুড়ি বই কিনে আনতে হয়।’
এ ছাড়া ওই চাঁদার টাকায় নৌযান শ্রমিকদের কোনো উপকার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো শ্রমিক বিপদে পড়লে আমরা সামলাই। আমিতো একা চাঁদা ওঠাই না। আমার মতো আরও অনেক লোক এ রকম চাঁদা ওঠাচ্ছে তাদের দেখছেন না কেন?’
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘নেছারাবাদে ছোট–বড় ট্রলার চালিয়ে অনেক লোক জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের যাতে কোনো প্রকার হয়রানি না হয়, এ জন্য উপজেলা প্রশাসন পাশে আছে। কেউ যাতে কোনো প্রকার চাঁদাবাজি না করতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চাঁদা তোলার ব্যাপারে জাকির হোসেনের অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’