সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় পতিত জমিতে পানিফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকেরা পানিফল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। সুস্বাদু এ ফলটি বাজার জাতকরণ খুবই সহজ। জলাবদ্ধ এলাকায় পতিত জমিতে খুব সহজেই চাষ করা যায় এ ফলটি। অন্যদিকে, সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলে ক্রেতাদের মধ্যে বেড়েছে পানি ফলের জনপ্রিয়তা। তা ছাড়া উপজেলা থেকে উৎপন্ন এ ফলটি এখন চলে যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন বাজারে।
গতকাল শুক্রবার সকালে খেত থেকে পানিফল তুলছিলেন তালা উপজেলার ঘোষনগর গ্রামের জয়ন্ত শেখর দেবনাথের ছেলে রবী শংকর দেবনাথ (৪৫)। তিনি জানান, পানিফল চাষ করে এখন সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। চলতি মৌসুমে সাড়ে ছয় বিঘা জমিতে পানি ফলের চাষ করেছেন তিনি। পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় এ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অন্য কৃষিকাজ করা সম্ভব হয় না। যার কারণে গত তিন বছর ধরে জলাবদ্ধ জমিতে পানিফল চাষ শুরু করেছেন তিনি। এতে বিঘা প্রতি জমির হারিসহ খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এখন প্রতিদিন প্রায় সাত মন পানিফল বিক্রয় করেন তিনি। বর্তমানে প্রতি কেজি পানিফল বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। বছর শেষে সবকিছু খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকা থাকে।
পানিফল তুলছিলেন শ্রমিক সালমা, হাসিনা, জাহিদা। তাঁরা জানান, তাঁরা এখানে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করেন (চুক্তিভিত্তিক দিনমজুর)। প্রতি ঘণ্টায় ৩০ টাকা করে মজুরি পান। গাছ থেকে ফল তুলে নিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করে দিতে হয়।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জলাশয়ে চাষ হওয়া পানিফল স্থানীয় চাষিদের কাছে ‘পানি শিঙাড়া’ নামেও পরিচিত। এ ফলের কোনো বীজ নেই। নিচু এলাকার বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। এ ফল পানিতে ভরপুর এবং তাতে প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা খাতুন জানান, পতিত জমিতে পানিফল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। এই ফলের পুষ্টিমানও বেশি। উপজেলায় দুই হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছে।