কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলেগত দুই দিন ধরে জীবিত ও মৃত বেশ কয়েকটি রাজ কাঁকড়া ভেসে এসেছে। কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়ায় নির্মাণাধীন বিমানবন্দরের রানওয়ের পূর্ব পাশে বাঁকখালী নদীর মোহনা, সোনাদিয়া ও বিভিন্ন উপকূলে রাজ কাঁকড়া ভেসে আসার খবর পাওয়া গেছে।
গত শনিবার বিকেলে বাঁকখালী নদীর মোহনায় গিয়ে দেখা যায়, দুটি জীবিত রাজ কাঁকড়া সৈকত তীরে আটকে আছে। আশপাশে আরও অন্তত ১৫ থেকে ২০টি মরা রাজ কাঁকড়া পড়ে রয়েছে। সেখানে লাল কাঁকড়া ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ দেখা যায়। এসব মরা কাঁকড়া খেতে ভিড় করছে কুকুর ও কাক। কি কারণে রাজ কাঁকড়া মারা পড়ছে তার সঠিক কারণ বলতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
সমুদ্র গবেষক ও মৎস্য বিজ্ঞানীরা বলেন, বঙ্গোপসাগরের একমাত্র লিভিং ফসিল বা জীবন্ত জীবাশ্ম হলো হর্সশো ক্র্যাব বা রাজ কাঁকড়া। এটিকে স্থানীয়ভাবে ‘দিও কিঁয়ারা’নামে পরিচিত। নীল রক্তের এ প্রাণীটির রক্ত জাদুকরী ওষুধে গুণ সম্পন্ন। এটি প্রকৃতিতে প্রায় ৫০ কোটি বছর ধরে টিকে রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৫০ সালে রাজ কাঁকড়া নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসন ওষধি কাজে প্রাণীটির রক্তের ব্যবহার অনুমোদন দেয়।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, সাগরে জেলেদের জালে আটকে পড়ে বা পানি দূষণসহ নানা কারণে মৃত্যু হতে পারে। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে কারণ অনুসন্ধান করবেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ বলেন, সাগরের সবখানে রাজ কাঁকড়ার বিচরণ রয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সামুদ্রিক প্রাণী। তিনি বলেন, জেলেদের অসচেতনতার কারণে জালে আটকে পড়ার পাশাপাশি নানা কারণে প্রায় সময় রাজ কাঁকড়া মারা যাচ্ছে। আবার সাগর দূষণ হলেও মারা যেতে পারে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কক্সবাজার কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওষধি গুণের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে রাজ কাঁকড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই প্রাণীটি রক্ষা করা গেলে সুনীল অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সম্প্রতি মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এ লক্ষ্যে গবেষণার কাজ শুরু করেছে।