কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বাদাম চাষ বেড়েছে ৬০ হেক্টর জমিতে। অল্প খরচে লাভজনক হওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে বাদাম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকেরা।
রৌমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলায় বাদামের চাষ হয়েছিল ৮০ হেক্টর জমিতে। এবার চাষ হয়েছে ১৪০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের চরে বাদাম চাষের উপযোগী মাটি রয়েছে। এর মধ্যে বন্দবেড়, চরশৌলমারী, দাঁতভাঙ্গা ও যাদুরচর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের চরগুলো বেশি বাদাম চাষের উপযোগী।
বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ারচ গ্রামের কৃষক শের আলী, সেলিম মিয়া ও মোড়ল মেম্বারের সঙ্গে বাদাম চাষ নিয়ে কথা হলে জানান, বাদাম চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। একই জমিতে বছরে দুবার বাদাম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। তাঁরা বলেন, বাদাম যেমন একদিকে সুস্বাদু, মুখরোচক ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ফসল অন্যদিকে তেলের চাহিদাও পূরণেও এটি ব্যবহার করা হয়। বাদামের গাছ গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবেও ব্যবহার হয়ে থাকে।
চরশৌলমারী ইউনিয়নের খেদাইমারী গ্রামের আবু বক্কর ও সৈয়দ আলী, ঘুঘুমারী গ্রামের কাশেম মোল্লা ও হাসান আলী, ইটালুকান্দা গ্রামের লাভলু মিয়া বলেন, আমাদের চরের জমিতে দুধরনের বাদামের চাষ হচ্ছে। চিনাবাদাম ও দেশি বাদাম। দেশি বাদামে ২ থেকে ৩টি দানা থাকে, চিনাবাদামের থাকে ৪ থেকে ৬টি দানা। তবে দেশি বাদামের উৎপাদন ভালো হয়।
চরশৌলমারী ইউনিয়নের ওই কৃষকেরা জানান, ভাদ্র মাসের শেষের দিকে বাদাম বীজ রোপণ করলে পৌষ মাসে অর্থাৎ চার মাসে বাদাম তোলার উপযোগী হয়। বাদাম তোলার পর একই জমিতে পুনরায় বাদামের বীজ রোপণ করা হয়। পৌষ মাসে বাদামের বীজ রোপণ করলে জ্যৈষ্ঠের প্রথমদিকে দ্বিতীয় ধাপের বাদাম ঘরে তোলা যায়। এভাবে বছরে দুইবার বাদামের উৎপাদন হয়।
খেদাইমারী গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করি। প্রতি বিঘায় খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা করে। প্রতি বিঘায় বাদাম বিক্রি করে পেয়েছি ২৮ হাজার টাকা। গতবারের চেয়ে এবার দুই বিঘা বেশি জমিতে বাদাম চাষ করেছি।’
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়ন, বন্দবেড় ইউনিয়ন, ও যাদুরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চর এলাকায় প্রায় ১৪০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৬০ হেক্টর জমি বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে।’