নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইরি-বোরোর ভরা মৌসুমে প্রান্তিক কৃষকেরা সারের কৃত্রিম সংকটে ভুগছেন। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তবে সারের ডিলাররা এ সংকটের জন্য স্থানীয় বিএডিসি সার গুদামের গুদাম রক্ষক বা স্টোর কিপারকে দোষারোপ করছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) তালিকাভুক্ত সাতজন সার ডিলার রয়েছেন। তাঁদের অনুকূলে বিসিআইসি থেকে সরবরাহ করা সার গুদামজাত করা হয় বিএডিসির বসুরহাটের সার গুদামে। এ গুদাম থেকে ডিলাররা তাঁদের ডিও লেটারের বিপরীতে সার উত্তোলন করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে সার বিপণন করেন। কিন্তু সারের গুদাম রক্ষক ও তাঁর অধীন লোকজনের কর্মকাণ্ড সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডিলারদের অভিযোগ, গাড়িভাড়া করে নিয়ে গুদামে গেলে নানা অজুহাতে টাকা দাবি করা হয়। চাহিদামতো টাকা দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক সার নিয়ে ফিরে আসা যায়। গুদামের কর্মচারীদের টাকা না দিলে ভাড়া করা খালি গাড়ি নিয়ে ফিরে আসতে হয়। এর ভুক্তভোগী হয় তৃণমূলের কৃষকেরাও। ডিলাররা সার না নিতে পারলে কৃষকদের খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে অধিক মূল্যে সার কিনে নিতে হয়।
চলতি ভরা ইরি-বোরো মৌসুমে সার নিয়ে এ তেলেসমাতিতে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ভুক্তভোগী শাহজাদপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল ও নূরনবী জানান, করোনার মৌসুমে উৎপাদন ঘাটতি মেটাতে সরকার নানা ধরনের প্রণোদনা দিলেও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীরা অহেতুক সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। এতে উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বসুরহাট সার গুদামের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সার ডিলার মুছাপুরের কাছওয়া এন্টারপ্রাইজ ও চরকাঁকড়া পেস্কারহাটের সিরাজ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে সার ডিলারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার দুপুরে বসুরহাট সার গুদামে গিয়ে দেখা যায়, গুদাম রক্ষকের কার্যালয়ের দরজা বন্ধ। নুরুল ইসলাম ও নাহিদ নামের দুজন আনসার সদস্য তাঁদের আনসার শেডে রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ত। গুদামরক্ষক আমিনুল হক চৌধুরী কোথায় জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘স্যার বিএডিসি ফেনী উপপরিচালকের দপ্তরে গেছেন।’
পরে মোবাইলে ফোন করলে গুদামরক্ষক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। সার লোড-আনলোডে টাকা আদায়ের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, এই অভিযোগ সত্য নয়। তবে উপস্থিত আনসার সদস্যরা স্বীকার করেন, বন্ধের দিনে সার সরবরাহের ক্ষেত্রে চা-পানির জন্য কিছু টাকা নেওয়া হয়।