সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় গুমানী নদীর ধামাইচ বাজার খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। সেতুর অভাবে বছরের প্রায় আট মাস নৌকাই তাঁদের ভরসা। আর শুষ্ক মৌসুমে চার মাস বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অন্তত ১৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্ষায় নদীটি পারাপারে তাঁদের একমাত্র ভরসা খেয়া নৌকা। একদিকে পারাপারে তাঁদের সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে নৌকা ভাড়া। নদীর দুই পাড়ের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
তাঁরা আরও বলেন, ওই নদীর দক্ষিণ পাড়ে ধামাইচ বাজার। যেখানে বসে সাপ্তাহিক হাট। তা ছাড়া ধামাইচ বাজারের অদূরে মহাসড়ক। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে এই বাজারের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। তাই ধামাইচ বাজারে গড়ে উঠেছে ব্যাংক-বিমা অফিস। পাশেই রয়েছে ধামাইচ উচ্চবিদ্যালয়, ধামাইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কবরস্থানসহ একাধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান। তাই ওই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ জরুরি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এক সঙ্গে ছোট-বড় দুটি নৌকায় খেয়া পারাপার চলছে গুমানী নদীর ওই অংশে। শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষ একসঙ্গে গাদাগাদি করে খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। ওই নদীর দুই পাড়ের ধামাইচ, নাদো-সৈয়দপুর, চরপাড়া, ঈশ্বরপুর, হেমনগর, নওখাদা, বিন্নাবাড়ি, চরকুশাবাড়ি, রানীগ্রাম, কাটাবাড়ি, বাহাদুর পাড়াসহ কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের মানুষ এ ভাবেই প্রতিদিন খেয়া পারাপার হন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম, হালিম মণ্ডল, ইব্রাহীম হোসেন ও নাজমুল হোসেন বলেন, সেতুর অভাবে নদীর ওপারে কবরস্থানে লাশ নিয়ে যেতেও নৌকার ওপর ভরসা করতে হয়। নদীর উত্তর পাড়ের গ্রামগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ধান, গম, ভুট্টা ও সবজি উৎপাদন করেন কৃষকেরা। নদীতে সেতু না থাকায় ন্যায্য দাম পান না তাঁরা।
সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ হেল বাকি বলেন, গুমানী নদীর ধামাইচ বাজার খেয়াঘাটে একটি সেতুর অভাবে হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন। যাতায়াত সুবিধা না থাকায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকেরা।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, গুমানী নদীর ওপর ধামাইচ অংশে সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রাক্কলিত প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প পাস হয়ে এলে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।