ইলিশের খরা যেন কেটে যাচ্ছে। ভরা বর্ষায় নদীতে দেখা মিলছে রুপালি ইলিশের। তিন দিন ধরে দাম কমেছে মণপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। গতকাল মঙ্গলবার নগরের পোর্ট রোড মোকামে হাজার মণ ইলিশ এসেছে।
রপ্তানি চলা সত্ত্বেও ইলিশের দাম কমায় আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইলিশের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে আসায় আগামী মাসের শুরুতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার আগে ইলিশের ঢল নামার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছিল।
টানা তিন দিন অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ইলিশ আহরণের মোক্ষম সময়। বৈরী আবহাওয়ায় সাগরের মাছ না এলেও নদীর ইলিশ আসা বেড়েছে। গতকাল বরিশাল নগরের পোর্ট রোড মৎস্য মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, কর্মব্যস্ত ছিল মোকাম। ট্রলার ভরে মেঘনা, কালাবদর, আড়িয়াল খাঁ, কীর্তনখোলার ইলিশ আসছে। এখন ইলিশের আকার অপেক্ষাকৃত ভালো।
পোর্ট রোড ইলিশ মোকামের ব্যবসায়ী ইয়ার উদ্দিন বলেন, ‘অনেক দিন পর মাছের দাম কিছুটা কমেছে। আগের চেয়ে ইলিশ আসছেও বেশি।’ তিনি মনে করেন, বৈরী আবহাওয়া শেষে সাগরের মাছ আসা শুরু করলে মোকাম আরও চাঙা হবে।
মৎস্যজীবীরাও ইলিশে আশার আলো দেখা শুরু করেছেন। বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহনের বাসিন্দা জেলে রহিম উদ্দিন, ফিরোজ আলম, মৌজে আলী বলেন, ‘বর্ষা বাড়ায় ইলিশ আগের চেয়ে বেশি ধরা পড়ছে।’
মেঘনা ঘেরা হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলেপাড়ায় কর্মব্যস্ততাও বেড়েছে।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘পোর্ট রোড মোকামে ১ কেজি সাইজের ইলিশ গতকাল ৪৮ থেকে ৪৯ হাজার টাকা মণে বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহেও ছিল মণপ্রতি ৫৪ থেকে ৫৬ হাজার টাকা। এলসি সাইজের (৬০০-৯০০ গ্রাম) ইলিশ প্রতি মণ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪০ হাজার টাকায়। তিনি বলেন, ‘সাগরের মাছ কম, তবে নদীর মাছ ভালোই আছে। গতকাল ১ হাজার মণের বেশি নদীর এবং মোহনার ইলিশ উঠেছে পোর্ট রোড মোকামে। গত দুদিনে মণপ্রতি ৪-৫ হাজার টাকা দাম কমেছে।’ আগামী মাসের শুরুতে নিষেধাজ্ঞার আগে ইলিশের আহরণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
মৎস্য কর্মকর্তা বিমল বলেন, ‘ইলিশ রপ্তানির ওপর এক ব্যক্তি রিট করেছেন; কিন্তু রপ্তানি অব্যাহত থাকলেও মাছ ধরা পড়ায় দামও কমেছে।’ সর্বশেষ বরিশাল থেকে ৫২ টন ইলিশ কলকাতায় গেছে বলে জানান তিনি।