কয়েক মাসের মহড়া শেষে কৃষ্ণসাগর ও ক্রিমিয়া থেকে গত মঙ্গলবার রাত থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে রাশিয়া। বুধবার প্রত্যাহারের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও নিজেদের সেনা প্রত্যাহার অব্যাহত থাকার কথা জানিয়েছে দেশটি। কিন্তু উত্তেজনা কমাতে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারে আশ্বস্ত হতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটো।
গতকাল এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মহড়া শেষে গতকাল আরও কিছু ট্যাংক, সামরিক সরঞ্জাম ও সেনা রাশিয়ার পশ্চিম সামরিক জেলায় নিজেদের স্থানীয় সেনানিবাসে ফিরে গেছে। তবে সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সময় সন্ধ্যা হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র অভিযোগ করেন, ইউক্রেন সীমান্তে নতুন ৭ হাজার সেনা সমাবেশ করেছে রাশিয়া। অবশ্য তাদের হাতে এর কোনো প্রমাণ নেই। ন্যাটোপ্রধানও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গতকাল যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রী লিজ ট্রুস বলেন, ‘রাশিয়ার ছলনায় আমরা ভুলব না।’ পরিস্থিতি যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীবিষয়কমন্ত্রী জেমস হেপি।
উত্তেজনা কমাতে রাশিয়ার পদক্ষেপকে সন্দেহ করায় সমালোচনা করেছেন মস্কোর কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা। রাশিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ‘হিস্টিরিয়ায়’ বা মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিয়োজিত দেশটির উপদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি। গতকাল বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের প্রতি রাশিয়া শ্রদ্ধাশীল। তবে দেশটি ন্যাটোয় যোগ দিতে পারবে না। এটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কারণ, ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলবে, যা কোনো দেশই মেনে নেবে না।’
ডনবাসে হামলা
ইউক্রেনের ডনবাস রাজ্যের ডনেটস্কে গতকাল বিদ্রোহী ও ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি, কামান ও শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীই তাদের ওপর হামলা করছে, যা ২০১৫ সালে করা ‘মিনস্ক চুক্তির’ বা যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন।
আল জাজিরা জানায়, ওই সব অঞ্চলে গোলাগুলি নতুন কিছু নয়। বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সেখানে নিয়মিতই গোলাগুলি হয়। ২০১৪ সালের পর থেকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সেখানে অন্তত ১৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
ডনবাস ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য। ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার সহায়তাপুষ্ট বিদ্রোহীরা সেখানে ডনেটস্ক ও লুহানস্ক নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে। রাশিয়াসহ বিশ্বের কোনো দেশ এখনো এদের স্বীকৃতি দেয়নি।