নওগাঁর মান্দায় প্রতিবছরের মতো এবারও সরিষাখেতের পাশে মৌ-চাষের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন মৌচাষিরা। মৌচাষিরা বলছেন, সরিষাখেতে চাষ হওয়া মধু হচ্ছে ‘গলিত সোনা’। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিশোধনাগার স্থাপন করলে উন্মোচিত হবে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। অর্জিত হবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ খাতে বেকারদের নতুন কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি হবে।
মৌচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরিষার ফুলে নভেম্বর মাস থেকে মধু সংগ্রহ শুরু হয়। এ ছাড়া বরই, কালিজিরা, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমেও মধু সংগ্রহ হয়ে থাকে। এভাবে বছরের অন্তত আট মাস তাঁদের কার্যক্রম চালু থাকে। অবশিষ্ট সময় বাড়ির খামারে তৈরি খাবার দিয়ে মৌমাছিকে লালন-পালন করতে হয়।
রাজশাহী মোহনপুর উপজেলা থেকে আসা মৌচাষি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আট বছর ধরে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে মধু সংগ্রহ করছি। এ মৌসুমে মল্লিকপুর গ্রামের পুকুরপাড়ে ১২০টি মৌবক্স স্থাপন করেছি। এরই মধ্যে একবার মধু সংগ্রহ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারে সংগ্রহের পরিমাণ বাড়বে।’
আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, সরিষা ফুল থেকে আহরিত মধু তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করতে হয়। সরিষা ফুলের মধু ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা মণ, লিচু ফুলের ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় কালিজিরা ফুলের মধু।’
মৌচাষি রুম্মন আহমেদ বলেন, গত বছর ভারতীয় ডাবর আমলা কোম্পানি এ দেশ থেকে মধু নিয়েছে। চলতি বছরেও মধু নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া দেশীয় অল-অয়েল কোম্পানিও মধু সংগ্রহ করছে। কিন্তু বাজারে আমদানির তুলনায় এ কোম্পানির সংগ্রহ অনেক কম।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে, সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা এ আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ ফসলের চাষ। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, সরিষার খেতে মৌমাছির আনাগোনা হলে পরাগায়নের পাশাপাশি ফলনও বাড়বে। উপজেলার ছয়জন বীজ উদ্যোক্তাকে অত্যাধুনিক ছয়টি মৌ-বক্স দেওয়া হয়েছে।