নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তাঁর লোকজন নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উপজেলা বিএনপির সভাপতির পারিবারিক মার্কেটের অংশ ভেঙে দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে মোহাম্মদী সুপারমার্কেট নামের দোতলা বিপণি বিতানটি ভাঙা শুরু করেন মেয়র কাদের মির্জা ও তাঁর লোকজন।
মার্কেট ভাঙা শুরু হলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সেলিমের ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন স্বপন বিষয়টি নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে অবহিত করেন। প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিপণি বিতান ভাঙার কাজ অব্যাহত ছিল।
হঠাৎ বিপণি বিতান ভাঙচুর শুরু করলে এখানকার ব্যবসায়ীরা বিস্মিত হন। এতে দোকানে থাকা ব্যবসায়ীদের প্রচুর মালামাল নষ্ট হয়। তাতে তাঁরা বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
জানা গেছে, বিপণি বিতানের যে অংশ ভাঙা হচ্ছে, সেখানে ১২ জন ব্যবসায়ীর বিভিন্ন পণ্যের দোকান ছিল। কিন্তু মেয়র ও তাঁর লোকজনের ভয়ে ব্যবসায়ীদের কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে ভাঙচুর শুরু হওয়ার পর অনেকে নিরুপায় হয়ে কিছু মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেন।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘ওই বিপণি বিতানের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মেয়র কাদের মির্জাকে জানানো হয়েছে। তিনি স্থগিতাদেশ না মানলে আমরা কী করতে পারি?’
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা ও তাঁর শতাধিক অনুসারীর উপস্থিতিতে পৌরসভার কর্মচারী ও শ্রমিকেরা বসুরহাটের জিরো পয়েন্টের ওই বিপণি বিতানের খালপাড়ের প্রায় ১০ ফুট অংশ ভাঙা শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে আবদুল হাই সেলিম পারিবারিকভাবে প্রায় ১৬ শতাংশ জমির ওপর বিপণি বিতানটি নির্মাণ করেন।
আবদুল হাই সেলিমের ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন বলেন, তাঁদের বিপণি বিতানটি সরকারি জায়গায় পড়েছে দাবি করে ২০২০ সালে কাদের মির্জা তাঁদের একটি চিঠি দেন। ওই চিঠির বিরুদ্ধে তাঁরা জেলা সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। পরে ওই বছরের ৪ মার্চ আদালত থেকে বিপণি বিতানের বিষয়ে ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রাখার জন্য আদেশ জারি করা হয়। যা এখনো বলবৎ রয়েছে।
বেলায়েত হোসেন আরও বলেন, ‘আদালতের রায় উপেক্ষিত হওয়ার পর আমরা আর কার কাছে বিচার চাইব?’
এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে কাদের মির্জা ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ বলেন, এটি বসুরহাট পৌরসভার বিষয়। পৌরসভার কার্যক্রম সম্পূর্ণ পৌর মেয়রের এখতিয়ার।