হোম > ছাপা সংস্করণ

যে গ্রামে কোনো আইন নেই

সম্পাদকীয়

একটি গ্রামকে শাসন করছে একটি উচ্ছৃঙ্খল গ্রুপ, অথচ তা নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা ছিল না—এ বড় তাজ্জব ব্যাপার। আমিনুলের মৃত্যুর পরই কেবল সামনে এল ঘাতক-বাহিনীর অতীত কার্যকলাপের সংবাদ। তহিদুল-শাহিন বাহিনী নিজস্ব আদালতে বিচার করে শাস্তি দেয় গ্রামবাসীকে। বগুড়ার আদমদীঘির লক্ষ্মীপুর গ্রামটাকে তারা বানিয়ে রেখেছিল ত্রাসের রাজত্ব। আমিনুলকে খুন করার পর এই বাহিনীর ছোটখাটো কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু মূল ষন্ডারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের দাপটে যে ৪০ পরিবার গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, তাদের কেউ কেউ এখন আবার ফিরতে শুরু করেছে গ্রামে।

আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটির দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কাশেমের ছেলে আমিনুলের হত্যাকাণ্ডের কারণেই সত্য জানতে পারছে মানুষ। প্রশ্ন হলো, এত দিন কেন কেউ কিছু জানতে পারেনি? একটি গ্রামের ৪০টি পরিবার চাঁদাবাজির চাপে গ্রামছাড়া হলো, অথচ কেউ সে কথা দেশের জনপ্রতিনিধিদের জানাল না, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গেল না, এ বড় বিস্ময়কর ব্যাপার। দুটো কারণে এই বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটতে পারে। একটি হলো, সন্ত্রাসের ভয়ে তারা জনপ্রতিনিধি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যায়নি। অন্যটি হলো, গ্রামবাসী মনে করেছে, এই বেপরোয়া গোষ্ঠীটি এতটাই প্রভাবশালী যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা জনপ্রতিনিধিরা ওদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না। কিন্তু গ্রামটি যে খারাপ মানুষদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছিল এবং সেই দূষিত পরিবেশেই কাটছিল গ্রামবাসীর সময়, সে কথা অস্বীকার করা যাবে না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম তাঁর সন্তান হত্যার বিচার চান। এটা খুবই স্বাভাবিক এক চাওয়া। আমরা অবশ্যই তাঁর সন্তান হত্যার বিচার দাবি করি। কিন্তু একটা প্রশ্ন এড়ানো যাবে না, তাঁর ছেলে আমিনুলও তো ছিলেন এই তহিদুল-শাহিন বাহিনীর সদস্য। তিনি কি নিজ সন্তানকে বাধা দিতে পারেননি? অবৈধ টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা করতে গিয়েই মারা গেলেন আমিনুল। আবুল কাশেম যখন ‘একাত্তরের ঘাতকদের চেয়েও নির্মম’ বলে তহিদুল-শাহিন বাহিনীকে শনাক্ত করেন, তখন যে তিনি তাঁর ছেলের কথাও নিশ্চয়ই বলেন। মনে প্রশ্ন আসে, তিনি কি সত্যিই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চালানো সীমাহীন নির্মমতার সঙ্গে গ্রামের কয়েকটি যুবকের ঔদ্ধত্যকে তুলনাযোগ্য মনে করেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, তাঁর ছেলের কার্যকলাপকে তিনি কী চোখে দেখেছেন, সেটা কেন পরিষ্কার করছেন না?

সন্তানহারা পিতার মনে দুঃখ দেওয়ার জন্য প্রসঙ্গটির অবতারণা করা হয়নি। মূলত, একটা প্রবণতার সৃষ্টি হয়েছে, নিজে যতক্ষণ সংকটে না পড়ছি, ততক্ষণ আমরা কেউ সমালোচনা করছি না। আক্রান্ত হলেই কেবল প্রতিবাদ করছি, তার আগে নয়।

একটি গ্রামে কোনো শক্তিমানের নিজস্ব আদালত থাকতে পারে না। তহিদুল-শাহিন গ্রুপের শক্তির উৎস খুঁজে বের করতে হবে। প্রতিটি সদস্যের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে এই অসুস্থ প্রবণতা আরও কোথাও কোথাও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ