অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে নিয়ে এসেছিল পোশাকশ্রমিক মা-বাবা। কিন্তু ১৪ বছর বয়সী এই কিশোরী এখনই বিয়ে করতে চায় না। তার ইচ্ছে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। তাই কৌশলে একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছে সে। গতকাল শনিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই কিশোরী জানায়, সে মা-বাবার সঙ্গে ঢাকায় থাকে। সেখানে একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। সম্প্রতি মা-বাবা তাকে নিয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলার মাছিমপুর গ্রামে নানাবাড়িতে ওঠেন। এরই মধ্যে সে জানতে পারে, বিয়ে দেওয়ার জন্যই তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের নাগদহ গ্রামে দাদার বাড়িতে এনে পার্শ্ববর্তী ওয়ালিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে তার। এ কথা জানার পর সে বাড়ির পাশেই বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’ ভূমিহীন সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি অবগত করে। পরে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ তথ্য জানালে প্রশাসনের লোকজনের হস্তক্ষেপে মেয়েটি বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পায়।
ওই কিশোরী আরও জানায়, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মা-বাবা রাগ করে তাকে নানার বাড়িতে রেখে ঢাকায় চলে গেছে।
চংধুপইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আল বেলাল বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বয়স হওয়ার আগে যেন
তাকে বিয়ে না দিতে পারে সে বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তদারকি করা হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, মেয়ের অভিভাবকের কাছ থেকে ‘বাল্যবিয়ে দেবেন না’ বলে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। এতে মেয়েটির মা-বাবা রাগ করে তাকে নানার বাড়ি রেখে ঢাকায় চলে যান। মেয়েটিকে নানার বাড়ি থেকে নিয়ে এসে দাদার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।